মাগুরা জামায়াত আমিরের কাণ্ড: জুলাই হত্যা মামলার আসামির জামিনে দিলেন প্রত্যয়নপত্র

Share

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি: মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এ বি এম বাকের হোসেনের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে নিহত দুই ছাত্র শহীদ আহাদ ও সুমন হত্যা মামলার একাধিক আসামিকে জামিন করতে দলীয় প্যাডে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যাদের নিজেদের কর্মী দাবি করে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাকর্মী। তাদেরকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী হিসেবে তিনি প্রত্যয়ন দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওই ঘটনায় স্থানীয় সাধারণ জনতার মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে মহম্মদপুরে দুই ছাত্র আহাদ ও সুমন শহীদ হন। তাদের পরিবার করা হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাবুদ্দীন ও সোহেল রানাকে নিজেদের কর্মী দাবি করে বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর প্যাডে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এম বাকের হোসেন। তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত মাগুরা-২ আসনের প্রার্থী।

প্রত্যয়নপত্রে তিনি লেখেন, আসামিরা আমাদের সাংগঠনিক পরিবারের একজন সদস্য। আমার জানা মতে, তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নন। তিনি ইসলামী শরীয়ত পালন করে চলেন এবং তাদের পরিবার ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা গড়তে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

এমন প্রত্যায়ন দেওয়ার পর হত্যা মামলায় তাদের জামিন হয়েছে। জামিন পাওয়ায় পর বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভে ফুসে উঠেছে মাগুরা জেলার ছাত্রজনতা ও সাধারণ মানুষ।

ছাত্রনেতা তাওফিক কালাম অভি, মেহেদী হাসান মামুন, আতিকুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র জনতার ওপর যে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছিল সেখানে মহম্মদপুরের আহাদ ও সুমন নামে দুজন শহীদ হন। তাদের হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। কিভাবে বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী বৈধতা দিয়ে তাদের নিজেদের কর্মী হিসেবে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ কঠোরভাবে দমন করা হবে।

শহীদ আহাদের চাচা ইউ সদস্য মো. ইয়াকুব আলী বলেন, আমার ভাতিজা ছাত্রজনতার আন্দোলনে শহীদ হয়েছে। শহীদদের সঙ্গে এত বড় বেইমানী জেলা জামায়াতের আমির করতে পারে এটা আমার জানা নেই। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

মহম্মদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক অধ্যক্ষ মৈমুর আলী মৃধা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর মাগুরা জেলার আমির বাকের হোসেন ফ্যাসিস্টদের এবং আহাদ-সুমন হত্যা মামলার আসামিদের জামিনের সহায়তা করতে দলীয় প্যাডে নিজেদের কর্মী দাবি করে প্রত্যয়ন দিয়েছে জানতে পেরেছি। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক ঘটনা। এর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির এ বি এম বাকের হোসেন বলেন, আমার কাছে অনেকেই প্রত্যয়ন নিতে আসে। আমার কাছে তথ্য গোপন করে প্রত্যয়নপত্রটি নিয়েছে। আমি জানতাম না ওরা আহাদ-সুমন হত্যার আসামি।

Read more