যশোর প্রতিনিধি
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (সাবেক) পলাতক কাজী নাবিল আহমেদের ছোট ভাই বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের তৎকালীন পরিচালক দূর্নীতিবাজ কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য করার প্রতিবাদে এবং অপসারণের দাবিতে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন জেলা সর্বস্তরের ক্রীড়া সংগঠক এবং সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়বৃন্দ। মঙ্গলবার সকালে জেলা ক্ষুব্দ ক্রীড়া সংগঠক এবং সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়বৃন্দ এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছেন।
স্মারকলিপিতে জেলার ক্রীড়া সংগঠক এবং সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়বৃন্দ বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটিতে নতুন সদস্য হিসাবে কাজী ইনাম আহমেদের নাম সংযোজন হওয়ায় আমরা রীতিমত হতবাক, মর্মাহত, আশাহত এবং ক্ষুদ্ধ। বিগত দিনে উনি যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে জড়িত ছিলেন কিন্তু কার্যত উনি খেলার উন্নয়ন, ক্রীড়া সংস্থার উন্নয়ন, মাঠ, খোলায়াড়দের ভালো মন্দ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে জনসভা করার কারণে স্টেডিয়ামের গ্যালারী ভাঙ্গা সহ মাঠের প্রচুর পরিমানে ক্ষয়ক্ষতি উনার মাধ্যমে এবং প্ররোচনায় করা হয়েছিলো। আমরা জানতে চাই কার সুপারিশে এবং কোন অথরিটির মাধ্যমে এই সদস্য পদটি যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এডহক কমিটিতে সংযোজন হলো। কাজী ইনাম আহমেদ সদস্য হওয়ায় যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এবং যশোর ক্রীড়াঙ্গনে কোন সুফল বয়ে আনা তো দূরের কথা বরং জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিগত ১৪ বছরের অচল অবস্থা এবং জটিলতা আরো বৃদ্ধি হবে। উনি শুধু ব্যক্তি স্বার্থে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। যেটি উনি বিগত বছর গুলোতেও করেছিলেন।
বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের ‘আমলে যশোর সংসদীয়-৩ আসনের বিনা ভোটের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ উনার ভাই হওয়ার সুবাদে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে কিছু সুবিধাভোগী, দুর্নীতি পরায়ন সংগঠককে সাথে নিয়ে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দেখার আশ্বাসে ক্রীড়াঙ্গনে মারাত্মকভাবে বিভাজন সৃষ্টি করেছিলেন এবং সর্বক্ষেত্রে একনায়কতন্ত্রের আমল জারী করেছিলেন। যেটা ক্রীড়াঙ্গণের ক্ষেত্রে একেবারেই বেমানান। কোন সংগঠক বা খেলোয়াড় তাদের ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করতে পারতেন না। সঠিক, সত্য, নিরপেক্ষ কথা বললে তাকে মাঠ থেকে তিরস্কৃত হতে হতো। যার ফলে বিগত দিনে কাজী ইনাম আহমেদ জেলা ক্রীড়া সংস্থায় থাকাকালীন ক্রীড়াঙ্গনের দক্ষ সংগঠক বৃন্দ এবং সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় বৃন্দ মাঠ বিমুখ হয়ে পড়েছিলেন।
তাই কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটিতে একজন সদস্যের নাম বাদ দিয়ে তাকে অর্ন্তভুক্ত করায় আমরা তীব্র্র প্রতিবাদ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছি এবং অনতিবিলম্বে কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য পদ থেকে অপসারণ করারও জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ দিকে স্মারক লিপি প্রদান শেষে জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিকনায়ক মাহতাব নাসির পলাশ বলেন, কাজী ইনাম আহমেদকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তাকে প্রত্যাহার করা না হলে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করার হুশিয়ারি দেন। একই দাবিতে আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামের আমেনা খাতুন ক্রিকেট গ্যালারীর নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক জাতীয় ফুটবলার সৈয়দ মাশুক মো. সাথী, জেলা দলের সাবেক ক্রিকেটার মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, মোস্তাক নাসির টনি, খান শফিক মো. রতন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা আখিরুজ্জামান সান্টু, সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি এ বি এম আখতারুজ্জামান, ক্রীড়া সংগঠক হিমাদ্রী সাহা মনি, শহিদ হোসেন লাল বাবু প্রমুখ।