যশোর অফিস
যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেন জনি ও আব্দুর রাজ্জাককে শো-কজ করেছে সিমিত। সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন করায় কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা সে মর্মে আগামী বুধবারের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই দিন সমিতির সদস্য আসাদুজ্জামানের সদস্য পদ ফিরিয়ে দিয়েছেন। বুধবার সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর।
অভিযোগে জানা গেছে,যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেন জনি কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার একটি জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান টুটুল। জমি রেজিস্ট্রির আগে সমুদয় টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সুচতুর জনি রেজিস্ট্রর আগে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। পরবর্তীতে টুটুল বহুদেনদরবার করে আরও ১৭ লাখ টাকা আদায় করেন জনির কাছ থেকে। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে টুটুলকে হুমকি দিতে থাকেন আইনজীবী জনি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে টুটুল পাওনা টাকা আদায়ে আইনজীবী সমিতিতে জনির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। সমিতর সভায় অভিযোগের উপর আলোচনা শেষে সমিতির সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাসকে আহবায়ক ও আরএম মঈনুল হক খান ময়নাকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি বাদী ও বিবাদীদের বক্তব্য গহণ করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সৈয়দ কবির হোসেন জনিকে অভিযুক্ত করে সমিতিতে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটি। গতকাল বুধবার সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের উপর শুনানি শেষে সৈয়দ কবির হোসেন জনিকে শো-কজ ও সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন করায় কেন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আপনার সদস্যপদ বাতিল করা হবেনা সে মর্মে আগামী বুধবারের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অপর দিকে, অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিলেন যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে। ২০১৯ সাল থেকে ২২ সাল পর্যন্ত আব্দুল রাজ্জাক ৮ চেকের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকুলে যায়। পরবর্তীতে আদালতের আদেশে সেশন-১৫৭৭/২২ মামলায় বিবাদী পক্ষ ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা, সেশন ২৩৮৫/১৯ মামলায় বিবাদী পক্ষ ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সেশন ১৪৫২/২১ মামলায় বিবাদী পক্ষ চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ৫ লাখ টাকা, সেশন ২৩১৬/২১ মামলায় ১৫ লাখ টাকা, সেশন ৫৬৭/২০ মামলায় বিবাদী পক্ষ ১ লাখ টাকা, সেশন ৪০৬/২০ মামলায় বিবাদী পক্ষ চলতি বছরের ৩ মার্চ ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৫শ’ টাকা, সেশন ১৯০৭/২০ মামলায় বিবাদী পক্ষ ২০২৪ সালের ১০ জুলাই ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও সেশন ১৩৫৪/১৯ মামলায় বিবাদী পক্ষ ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ট্রেজারিতে জমা দিয়েছিল। মোট টাকার পরিমান ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫শ’। আদালতে আদেশে বাদী পক্ষকে তাদের নিয়োজিত আইজীবীর মাধ্যমে এজি অফিস থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধেল আদেশ দেয়া হয়। আদালতের আদেশে যশোর এজি অফিস থেকে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫শ’ টাকা চেক গ্রহণ ও ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থকেন। একপর্যায়ে চলতি বছরের ৪ জুন আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাম ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। এ টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওহাব গত ২৮ জুলাই যশোর আইনজীবী সমিতিতে সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সদস্য আব্দুর রাজ্জাকে শো-কজ করেছে আইনজীবী সমিতি। একই সাথে কেন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন সদস্যপদ বাতিল করা হবেনা সে মর্মে আগামী বুধবারের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।