নামাজ ইসলামী শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ ইবাদত। আর এ নামাজ একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আদায় করতে হয় যা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে।
এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক। ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ। হাফ হাতা জামা পরে নামাজ আদায় হবে?
সাধারণ অবস্থায় এবং নামাজেও পুরুষের সতর হলো নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত জায়গা। শরীরের এইটুকু অংশ নামাজে ঢেকে রাখা ফরজ। শরীরের অন্যান্য অংশ অনাবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে বিনা কারণে মাথা, পেট-পিঠ, কাঁধ ইত্যাদি খোলা রেখে নামাজ পড়া পুরুষের জন্য মাকরুহ।
নামাজে আমরা মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়াই। তাই সাধ্যানুযায়ী মার্জিত পোশাক পরে নামাজ আদায় করা উচিত। নামাজের পোশাক এমন হওয়া উচিত যে পোশাক পরে আমরা সম্মানিত ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে লজ্জাবোধ করি না।
প্রসঙ্গত, যে অবস্থায় আমরা সম্মানিত মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে যাই না, ঐ অবস্থায় নামাজে দাঁড়ানো তথা আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোও উচিত নয়।
কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান! প্রত্যেক নামাজের সময় তোমরা সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান করবে’। (সূরা: আরাফ, আয়াত ৩১)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ যেন এক কাপড় পরে এমন অবস্থায় নামাজ না পড়ে যে তার কাঁধে ওই কাপড়ের কোনো অংশ নেই। (সহিহ বুখারি: ৩৫২, সহিহ মুসলিম: ৫১৬)
উল্লিখিত কোরআনের আয়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায়, নামাজ আদায়ের সময় শুধু সতর ঢাকাই যথেষ্ট নয়। বরং সতর ঢাকার পর সামর্থ্য অনুযায়ী মার্জিত পোশাক পরিধান করে নামাজ আদায় করা উচিত।
তাই স্যান্ডো গেঞ্জি এবং এজাতীয় অন্যান্য পোশাক পরিধান করে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। জামার হাতা বা নিচের কোনো অংশ ভাঁজ করা অবস্থায়ও নামাজ আদায় করা মাকরুহ।
হাফহাতা শার্ট, টি-শার্ট ও গেঞ্জি যদি সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে পরিধানের উপযুক্ত হয়, তাহলে তা পরিধান করে নামাজ আদায় করা মাকরুহ নয়। আর যদি সে রকম না হয়, অতিরিক্ত আঁটসাঁট, পাতলা অর্থাৎ শুধু ঘুমানো বা ঘরে পরিধানের উপযুক্ত হয়, তাহলে তা পরিধান করে নামাজ আদায় করা মাকরুহ।