একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তিতে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধাপে আবেদন করেও কোনো কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি ২৫ হাজার ৩৪৮ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া ৫ হাজার ৭৬৫ জন। এছাড়া দেশের ৩৭৮টি কলেজ ভর্তির জন্য এক শিক্ষার্থীও পায়নি। আর ১০টি কলেজে কেউ ভর্তির জন্য পছন্দক্রম (চয়েজ) দেননি।
বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিজাউল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম ধাপে আবেদন করেছেন মোট ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৩১০ শিক্ষার্থী। তারা কলেজ পছন্দক্রম (চয়েজ) দিয়েছেন ৫৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৭টি।
এদিকে অনলাইনে মোট আবেদনকারীর মধ্যে প্রথম ধাপে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬২ জন। আর কোনো কলেজ পাননি ২৫ হাজার ৩৪৮ জন।
চলতি বছর সারা দেশের ৮ হাজার ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭৮ কলেজ ভর্তির জন্য এক শিক্ষার্থীও পায়নি। আবার ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ ভর্তির জন্য আগ্রহ দেখায়নি। সেখানে কেউ পছন্দক্রম দেয়নি।
যে কারণে কলেজ পাননি জিপিএ-৫ প্রাপ্তরা
একাদশে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী তার এসএসসির ফলাফল ও অনলাইন আবেদনের সময়ে দেওয়া পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন। একজন সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দক্রমে দিতে পারে। অনেকে পছন্দের দুই, তিন বা চারটি কলেজ পছন্দক্রমে দেয়।
মূলত তাদের সেই কলেজগুলোতে আসন শূন্য না থাকায় তারা ভর্তির সুযোগবঞ্চিত হয় বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নজর দেশের ভালো কলেজগুলোতে। তারা হাতে গোনা কয়েকটি কলেজ পছন্দক্রমে দেন। যেখানে সবার আকর্ষণ বেশি। এজন্য সেখানে প্রতিযোগিতা হয়। আর সেসব কলেজে জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই কেবল চান্স (সুযোগ) পান।
অধ্যাপক এহসানুল কবির বলেন, অনেক সময় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্য থেকে নম্বরের হিসাবে সামনের কয়েকজন সুযোগ পান। আর জিপিএ-৫ পেয়েও নম্বর কম থাকায় অনেকে বাদ পড়ে যায়।
কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের করণীয়
প্রথম ধাপে আবেদন করে যারা কলেজ পাননি, তাদের জন্য কী করণীয় তাও জানিয়েছে একাদশে ভর্তি কমিটি ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, এসব শিক্ষার্থীদের আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় ধাপে চলে যাবে। এখন শিক্ষার্থীদের শুধু অনলাইন আবেদনে গিয়ে পছন্দক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, আমার পরামর্শ থাকবে, তারা যেন পছন্দক্রমে নতুন কিছু কলেজ যোগ করে। তবে আমাদের আসনের কোনো সংকট নেই। সব শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে পারবে।
এদিকে প্রথম ধাপে আবেদন করে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীদের দ্রুত কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমেই তাদেরকে ৩৩৫ টাকা ফি পরিশোধ করে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। নিশ্চায়ন ফি পরিশোধ করতে কারও অসুবিধা হলে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি দিয়েও নিশ্চায়ন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
কেউ যদি প্রথম ধাপে কাঙ্ক্ষিত কলেজ না পান, সে ক্ষেত্রেও তাকে প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। কারণ দ্বিতীয় ধাপে আবেদন শুরুর আগে পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। সেখানে তারা পছন্দের কলেজ পেতে পারে।