যশোর প্রতিনিধি
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে মাশরুর রহমান সজিব নামে এক গৃহশিক্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। আজ মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আতোয়ার রহমান এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিশেষ পিপি আব্দুল লতিফ লতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত মাশরুর রহমান সজিব যশোর পালবাড়ি তেতুলতলা এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে ও ঢাকা বাড্ডার বৈশাখি স্বরনীর ট/১ এর ৭ তলার বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নির্যাতিত ছাত্রী ২০১৩ সাল যশোরের একটি কলেজে ভর্তি হন। এরপর পালবাড়ি এলকায় ফুফুর বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতো। গৃহশিক্ষক হিসেবে তাকে পড়াতো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মাশরুর রহমান সজিব। বাড়িতে পড়াতে আসা যাওয়ার একপর্যায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৬ সালের ১৫ জুন বাড়ির সকলে আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে চলে যায়। পরীক্ষার কারনে বাড়িতে একই ছিল ওই ছাত্রী। ওই দিন বিকেলে পড়াতে এসে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সজিব ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করে। এরপর সজিব ও ওই ছাত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সবিজ ওই ছাত্রীকে তার আত্মীয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমনে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস এবং গোপনে বিশেষ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারন করে রাখে। সজিবকে পরর্বীতে বিয়ের জন্য চাপ দিলে ঘুরাতে থাকে এবং যোগোযোগ বন্ধ করে দেয়। ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই সজিবের মাকে বিষয়টি জানালে, সজিব তাকে বিয়ে করবেনা এবং অন্যত্র বিয়ে করেছে বলে জানিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ৩ আগস্ট থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তা গ্রহণ না করায় ১৭ আগস্ট যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুলনাল-১ এধর্ষণের অভিযোগে মামলায় করেন ওই ছাত্রী।
আদালতের তৎকালিন বিচারক অভিযোগের তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দেন। ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি সজিবকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসমি মাশরুর রহমান সজিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড,২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণা শেষে সাজাপ্রাপ্ত মাশরুর রহমান সজিব কারাগারে পাঠানো হয়।