ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩৪৪ জন। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে উপত্যকাটিতে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২ হাজার ৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের তাদের দৈনিক আপডেটে সোমবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জন নিহত এবং ৩৪৪ জন আহত হয়েছেন। যার ফলে মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনাহার ও অপুষ্টিতে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ২৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজায় উদ্ধার প্রচেষ্টা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন অথবা রাস্তায় পড়ে আছেন তবে ইসরাইলি বোমাবর্ষণ এবং সরঞ্জামের অভাবে জরুরি দল তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
এদিকে, মানবিক সাহায্য নিতে গিয়েও ইসরাইলি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। গত ২৪ ঘন্টায় এই ধরনের হামলায় ২৭ জন নিহত এবং ২৮১ জন আহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২৭ মে থেকে ইসরাইলি বাহিনী জরুরি খাদ্য ও সরবরাহ পৌঁছানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ১ হাজার ৯৬৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ১৪ হাজার ৭০১ জন আহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। এদিন ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। নতুন করে শুরু করা এই অভিযানে ১০ হাজার ৪৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪ হাজার ১৮৯ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি উপত্যকাটিতে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও রয়েছে ইসরাইল।