সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান আসিফ মুনির গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সোমবার ( ১২ মে) রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান আসিম মুনিরের গ্রেপ্তারের দাবিটি সত্য নয়। এই দাবিটি কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়া গত ৯ এপ্রিল থেকে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হলেও, পরবর্তী সময়ে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সরকারি ওয়েবসাইটেও তিনি বর্তমানে সেনাপ্রধান হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছেন।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনগুলোতে উক্ত দাবি ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘এবিপি আনন্দ’-এর সূত্রে প্রকাশ করা হয়েছে।
এই সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৮ মে দিবাগত রাত ১২টা ২২ মিনিটে এবিপি আনন্দ তাদের ফেসবুক পেজে এই দাবিতে একটি পোস্ট প্রকাশ করে। তবে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর, তৃতীয় দফায় সম্পাদনার মাধ্যমে ওই পোস্টে লেখা হয়: ‘পাকিস্তানের ১৬টি শহরে হামলা ভারতের’। অর্থাৎ, এবিপি আনন্দ পরবর্তীতে ফেসবুক পোস্টটি সম্পাদনা করে মূল দাবিটি সরিয়ে দেয়।
এবিপি আনন্দ ছাড়াও একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির গ্রেপ্তারের দাবি প্রচারিত হলেও, কোনো আন্তর্জাতিক বা পাকিস্তানি স্থানীয় গণমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেনি।
এদিকে ৯ এপ্রিল প্রথম প্রহরেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের গ্রেপ্তারের দাবি প্রচারিত হলেও, সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সেদিন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনার সূচনা করতে মার্কিন সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এছাড়া, এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর সরকারি ওয়েবসাইটে সেনাপ্রধান হিসেবে আসিম মুনিরের নাম উল্লেখ করা রয়েছে। তাই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান আসিফ মুনিরের গ্রেপ্তারের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।