নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা: এবার ভয়ংকর প্রতারক ও মামলাবাজ সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন একজন যুবক। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে শরিফ সরকার নামে আলফাডাঙ্গার স্থানীয় একজন যুবক নিজের ও পরিবারের চেয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন।
এর আগে স্থানীয় তৃপ্তি খানমের বোন সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ”সিকদার লিটন একজন ভয়ংকর প্রতারক, ষড়যন্ত্রকারী ও ক্ষতিকারক লোক। সে সব সময় এলাকার মানুষকে ক্ষতি করার কাজে লিপ্ত থাকে। সিকদার লিটন আমার বোন তৃপ্তি খানমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করার পাঁয়তারা করিতেছে। যাতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের মানসম্মান জড়িত।”
জানা গেছে, সিকদার লিটনের বাড়ি আলফাডাঙ্গার টগরবন্দ ইউনিয়নে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টির বেশি মামলা রয়েছে। যারমধ্যে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, প্রতারণা অন্যতম। গত বুধবার দুপুরে ফরিদপুর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সিকদার লিটনকে আদালতে পাঠায় আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ। পরে আদালতে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। এই প্রতারকের বিরুদ্ধে পূর্বের আরও দু’টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল।
আলফাডাঙ্গা থানায় করা শরিফ সরকার তার জিডিতে উল্লেখ করেছেন, সিকদার লিটন একজন প্রতারক, মামলাবাজ, দাঙ্গাবাজ, সন্ত্রাসী লোক। সে ফেসবুকে সমাজের সম্মানিত লোকদের নামে বিভিন্ন সময় মনগড়া কথাবার্তা লিখে ফেসবুকে প্রচার করে থাকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি লিটন সিকদার স্থানীয় তৃপ্তি খানমকে নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন কথাবার্তা পোষ্ট দিলে ওই পোস্টের জবাবে আমি অন্য আরেকটি পোস্ট শেয়ার করি। এতে লিটন সিকদার আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চালিত ‘বাংলাদেশ এলডিপি’ ম্যাসেঞ্জারে ফোন দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে জীবন নাশের হুমকি দেয়। একইদিন সে আমাকে স্থানীয় গোপালপুর বাজারে পেয়ে একই হুমকি দেয়। আমার ধারণা, সিকদার লিটন যেকোনো সময় আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জানমালের ক্ষতি, মানসম্মান নষ্ট এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসাতে পারে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে জানান তিনি।
এদিকে সিদকার লিটনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে শরিফ সরকার প্রতিবেদককে বলেন, ‘তার (লিটন) বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। এলাকায় মোবাইল চুরি, চাকরির নামে মানুষের কাছ টাকা হাতানোসহ নানান অপরাধে সে দীর্ঘকাল এলাকা ছাড়া। তারপরেও এলাকার অনেককে মিথ্যা মামলা দিয়ে সে ফাঁসিয়েছে। নিজের শ্বশুরের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দিয়েছে ভয়ংকর এই প্রতারক। সিকদার লিটনের বিকাশে সর্বশেষ তিনমাসে সাড়ে ২২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু সে না কোনো ব্যবসায়ী, না কোনো চাকরিজীবি।প্রতারণার মাধ্যমেই সে এসব টাকা কামিয়েছে।’
আলফাডাঙ্গার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল হাসান বলেন, সিকদার লিটন একজন ভয়ংকর ও পেশাদার অপরাধী। দেশের বিভিন্ন জেলায় তার প্রতারণা ফাঁদ বিস্তৃত। তার বহু বিবাহও এলাকায় আলোচিত-সমালোচিত।’
এদিকে স্থানীয় তৃপ্তি খানমের সঙ্গে ঢাকার একটি হোটেলে সিকদার লিটনের রাত্রীযাপনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। এই তৃপ্তিকে কাজে লাগিয়ে মামলা বাণিজ্য চক্র গড়ে তুলেছিল এই প্রতারক।