ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো হবে ট্রাম্প ও মোদির সঙ্গে আলোচনা

Share

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মোদির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগেই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক মাশুল নীতি চালু করল। কোনো দেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর শুল্ক থাকলে, ঠিক সেই পরিমাণ শুল্ক তাদের পণ্যের উপরও বসাবে যুক্তরাষ্ট্র।

যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছেন,‘ভারতে সবচেয়ে বেশি মাশুল চালু আছে। আমি ওদের দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য করতে অসুবিধা হতো। আমরা রেসিপ্রোকাল নেশন। ভারত যে পরিমাণ মাশুল নেবে, আমরাও সমপরিমাণ মাশুল নেব। ন্যায্যতার স্বার্থে তা করতে হবে। আমি সহজ পন্থায় গেছি।

ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা ঐতিহাসিক বাণিজ্যপথ ধরে কাজ করতে একমত হয়েছি। এই বাণিজ্যপথ ভারত থেকে শুরু হয়ে ইসরায়েল হয়ে, ইটালিকে ছুঁয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসবে। সড়ক, রেল এবং সমুদ্র পথে চলা এই বাণিজ্য দুই দেশের অনেক সহযোগী দেশকে ছুঁয়ে যাবে।

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে ভারত

ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো হবে। ভারতে এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান বিক্রি করা হবে

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে সামরিক অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ বহু হাজার কোটি টাকা বাড়াব। আমরা ভারতে এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান বিক্রি করব।

মোদি জানিয়েছেন, ভারত যাতে সামরিক দিক থেকে প্রস্তুত থাকে, তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা পালন করছে।

মুম্বাই হামলার অভিযুক্তকে প্রত্যর্পণ

মুম্বাইতে ২৬/১১ হামলার অন্যতম অভিযুক্ত তাহায়ুর রানাকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমরা মুম্বাইয়ে ২৬/১১-র অন্যতম অভিযুক্ত এবং একজন ভয়ংকর মানুষকে ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছি।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযুক্তকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়েছেন, ‘ভারতে তাকে জেরা করা হবে এবং বিচার হবে।’

ভারতীয় তদন্তকারীদের মতে, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী তাহায়ুর রানা মুম্বাই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।

খালিস্তানিদের প্রসঙ্গ

সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, ভারতের অভিযোগ, খালিস্তানিরাও যুক্তরাষ্ট্রে বসে ভারতের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, তাদেরও কি ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে? বাইডেনের আমলে আমেরিকায় ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে ট্রাম্পের মত কী?

ট্রাম্প বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাইডেনের সম্পর্ক ভালো ছিল না। তখন অনেক কিছু হয়েছে, যা ঠিক নয়। আমরা এখনই একজনকে ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছি। আরও এরকম মানুষকে তুলে দেওয়া হবে। আমরা অপরাধ নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলব।’

অবৈধ অভিবাসী

প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়েছেন, ‘অভিবাসী– প্রশ্নটা শুধু ভারতকে নিয়ে নয়। যে কোনো দেশ থেকেই বেআইনিভাবে কেউ ঢুকলে তার সেখানে থাকার কোনো অধিকার নেই। কোনো ভারতীয় বেআইনিভাবে ঢুকলে আমরা তাকে নিতে প্রস্তুত।’

মোদি বলেছেন, ‘এখানেই বিষয়টি শেষ হচ্ছে না। যারা এভাবে আসছে, তারা সাধারণ পরিবারের সন্তান। তারা প্রতিশ্রুতি ও লোভে পড়ে যায়। তারা একটা সিস্টেমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। আমরা চেষ্টা করব, এই সিস্টেমকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে। মানব পাচার যাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করব।’

আদানি প্রসঙ্গ

প্রধানমন্ত্রী মোদিকে প্রশ্ন করা হয়, আদানিকে নিয়ে কী কোনো কথা হয়েছে?

মোদি বলেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। আমাদের সংস্কৃতি, চিন্তা বসুধৈব কুটুম্বকম, সারা বিশ্বের মানুষ আমার আত্মীয়। সব ভারতীয় আমার আত্মীয়। কিন্তু কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে এখানে কথা হয় না।’

ইলন মাস্ক

নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ‘ইলন মাস্ককে আমি অনেকদিন ধরে চিনি। যখন আমি মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন থেকে চিনি। স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে তিনি দেখা করতে এসেছিলেন।

যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি মোদির ওপর ছেড়ে দেন ট্রাম্প। তবে মোদিও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

Read more