ঢাকা টাওয়ার ডেক্স: ছবি সংগৃহীত: গত ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত হেবা দলিলের মাধ্যমে প্রায় শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন ১৯ বছর বয়সী জয়িতা। কে এই জয়িতা! সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের মেয়ে তাসফিয়া আহসান জয়িতার নামে বিপুল সম্পদের সন্ধান মিলেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৫ বছর আলোচিত ও প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন জিয়াউল আহসান। সর্বশেষ তিনি এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। আয়নাঘর প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারিগরও হলেন বরখাস্ত সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরদিন চাকরি থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুকে বেশ কিছু দালিলিক প্রমাণসহ একটা পোস্ট দিয়েছেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি। সেখানে তিনি লিখেছেন- ‘১৯ বছর বয়সী কন্যা তাসফিয়া আহসান জয়িতার নামে বরখাস্ত সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের সম্পদের কিছু অংশ।
এই পোস্টের নিচে অন্য আরেক কমেন্টেসে সামি লিখেছেন- ‘সময় স্বল্পতা ও ব্যস্ততার কারণে সকল জমির বিস্তারিত তথ্য বের করার সুযোগ হয়নি। কেউ আগ্রহী হয়ে প্রতিটি জমির দলিল ও বর্তমান বাজার মূল্যের তথ্য জানাতে পারলে দেশ উপকৃত হবে এবং সকলেই তা জানানো হবে। ধন্যবাদ।’
এদিকে ওই পোস্টের কাগজগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর জিয়াউল আহসান জলসিড়ি প্রজেক্টের পাঁচকাঠা জমি মেয়ের নামে হেবা দলিলের মাধ্যমে দান করেছেন। যার বাজার মূল্য দেখানো হয়েছে ১৪ লাখ ৬ হাজার টাকা। তবে বাস্তবে এই জমির মূল্য কয়েকগুণ বেশি। একই বছরের অক্টোবরে আরও একটি জমি মেয়েকে দিয়েছেন। যার বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। তবে এই সম্পত্তি কোথায় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর কাওসার আহম্মেদ অপু নামে একজন জিয়ার নাবালিকা মেয়েকে হেবা দলিলের মাধ্যমে আরও একটি জমি দেন। নারায়গঞ্জের রুপগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সিলমোহল দেওয়া ওই সম্পত্তির মূল্য দেখানো হয়েছে ৩৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
এছাড়া ২০২২ সালের ২৯ মার্চ তৌহিদুর রহমান সিয়াম নামে একজন জিয়া কন্যার নামে দশ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ লিখে দেন। এছাড়া মেহেদী হাসান দিপু, কাওসার আহমেদ অপু, লে. কর্নেল আজিজুল রহমান (অব.) এর পক্ষে লে. কর্নেল আসাদুল ইসলাম (অব.) তাসফিয়া আহসান জয়িতাকে আরও অনেক সম্পদ লিখে দেন।
তাছাড়া ঝালকাঠি সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে নুরুন নাহার রেনু, আমিরুন্নেছা মোট ৩৩৪ শতাংশ জমি তাসফিয়া আহসান জয়িতার নামে কবালা দলিলের মাধ্যমে দিয়েছেন। যা ২০২৩ সালে দেওয়া হয়।
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি’র পোস্টে অনেকে মন্তব্য করেছেন। তাদের মধ্যে একজন লিখেছেন- ‘এটা তো কিছুই না, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে গাড়ির ড্রাইভার, বাড়ির দারোয়ান, দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের নামেও অনেক সম্পদ পাওয়া যাবে।
দেলোয়ার আহমেদ নামে একজন মন্তব্য করেছেন- ‘একজন সামরিক কর্মকর্তা বাৎসরিক কত টাকা বেতন পায়? কিন্তু দুঃখের বিষয় সে যত টাকা বাৎসরিক বেতন পায় বৈধভাবে তার থেকে কয়েকশো গুণ সে অবৈধভাবে ইনকাম করছে। তার মানে বুঝার বাকি রইল না কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত তিনি।’
মিজানুর রহমান মামুন লিখেছেন- ‘খুন, গুম, নির্যাতনের মাধ্যমে অর্জিত। মানুষের অভিশাপ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাওয়া।’