ঢাকা অফিস: সচিবদের চিন্তার ‘সংস্কার’ চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’ দিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রশাসন পরিচালনায় অতীতের গৎবাঁধা ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে চিন্তাভাবনায় ‘সংস্কার আনতে’
সচিবদের সৃজনশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এক্ষেত্রে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান।
বুধবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) প্রথমবারের মত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সভায় সচিবদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
ইউনূস বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।
সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে এ সময়ে ‘মার্চিং অর্ডার’ দিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা ও মতামত নেওয়ারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত আমাদের উপহার দিয়েছে, তার উপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজিকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
“সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে। এবং সৃষ্টিশীল, নাগরিক-বান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে, যা নিয়মিত মূল্যায়ন/পরিবীক্ষণ করা হবে।”
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে গেলে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর ছাত্রদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস দেশে এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন।