জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যা বলেছেন

ঢাকা অফিস: ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার ১৭ দিনের মাথায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রায় আধাঘণ্টার এই ভাষণে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসন তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি ‘ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে’ অর্জিত নতুন বাংলাদেশ গঠনে এক প্রকার রূপরেখাও দিয়েছেন।

শুরুতেই স্মরণকালের চলমান ভয়াবহ বন্যার কথা তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, স্মরণাতিতকালের ভয়াবহ বন্যায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, যারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, যারা সবর্স্ব হারিয়েছেন, যারা দুঃসহ জীবনযাপন করছেন তাদের স্মরণে রেখে আজকের কথাগুলো বলছি।

বন্যাদুর্গতদের জীবন দ্রুত স্বাভাবিক করার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে নেওয়ার আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধে উদ্যোগ যাকে আভ্যন্তরীণ এবং আমাদের প্রতিবেশি দেশের সাথে যৌথভাবে নেওয়া যায় সে আলোচনা শুরু করেছি।

আপনার জানেন, বিপ্লবী ছাত্র-জনতা জাতীর এই ক্রান্তিলগ্নে আমাকে গুরু দায়িত্ব অর্পন করেছে। তারা নতুন এক বাংলাদেশ গড়তে চায়। নতুন প্রজন্মের এই গভীর আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপ এই প্রোগ্রামে আমি একজন সহযোদ্ধা হিসেবে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছি। দেশের সকল বয়সের, সকল পেশার, সকল মতের, সকল ধর্মের; সবাইকে বিনা দ্বিধায় এই সংগ্রামে যোগ দেওয়ার বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।

লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এবং লক্ষ লক্ষ মা বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছিলাম তা ফ্যাসিবাদ এবং স্বৈরাচারের হাতে ধ্বংস হয়ে গেছে। আপনারা দেখেছেন আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তারা কীভাবে শেষ করে দিয়েছে। দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে দুর্নীতি। এমন এক দেশে আমাদের দেশ রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে স্বৈরাচারের পিয়নও দুর্নীতি করে ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ গড়ার মতো অকল্পীয় কাজ করে গেছে নির্বিবাদে।

শিক্ষাখাতকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ব্যাংকিং ও শেয়ার বাজার খাতের লুটপাট, প্রকল্প ব্যয়ে বিশ্ব রেকর্ড, অবাধে সম্পদ পাচার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিজ দলের পুতুলে রূপান্তর বাকস্বাধীনতা হরণ, মানবাধিকার হরণ; এসবই তাদের অগ্রবাদ মাত্র। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ফ্যাসিবাদী সরকার জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতা ও অধিকার, দুঃশাসন, দুর্নীতি, অন্যায়, অনিয়ম, বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে জনসুরক্ষা বিপন্ন করেছে। জনগণকে নির্যাতন ও বঞ্চনা এবং বৈষম্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। নতুন প্রজন্মের মানুষসহ কোটি কোটি মানুষের ভোটাধিকার বছরের পর বছর হরণ করেছে। মানুষের এগিয়ে যাওয়ার পথে সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা করে স্বৈরাচার তার নিজের, পরিবার ও দলের কিছু মানুষের হাতে দেশের মালিকানা তুলে দিয়েছে।

প্রিয় দেশবাসী এই ধংসের দ্বারপ্রান্ত দাঁড়িয়েই আমাদের গড়তে হবে স্বপ্নের বাংলাদেশ। বৈষম্যহীন, শোষনহীন এবং কল্যাণময় রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গিকারবদ্ধ। আমি আপনাদেরকে সমস্ত শক্তি নিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের স্বপ্ন আমাদের স্বপ্ন। জাতীয় জীবনে তরুণরা যে মহাসুযোগ তৈরি করেছে আমরা সবাইকে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গণরোষের মুখে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান দেশ ত্যাগের আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই। উদার গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। আমরা এক পরিবার, আমাদের এক লক্ষ। কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের স্বপ্নকে ব্যহত করতে না পারে সেজন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

বাংলাদেশেকে আর কখনো কেউ পুলিশি রাষ্ট্র বানাতে পারবে না উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে যে সমর্থন পাচ্ছি তার জন্য ধন্যবাদ। আমরা অনুধাবন করছি। আমাদের কাছে প্রত্যাশা অনেক। আমরা সেই প্রত্যাশা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। যদিও দীর্ঘদিনের গণতন্ত্রহীনতা, ১৫ বছরে স্বৈরাচার সরকারের কাঠামো প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমাদের সামনে পর্বত সমান চ্যালেঞ্জ রেখে গেছে। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত। আজ আমি সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করতে আপনাদের সামনে এসেছি। শুধু আমি বলবো আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’

ছাত্র-জনতার বিপ্লবের গৌরব ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কাউকে পদত্যাগে জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে দাবি আদায়ে জোর করা, মামলার গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করা ও আদালতে হামলা করে আগেই এক ধরনের বিচার করার যে প্রবণতা তা থেকে বের হতে হবে। ছাত্রজনতার বিপ্লবের যে গৌরব ও সম্ভবনা এসব কারণে ম্লান হয়ে যাবে। নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রচেষ্টা ব্যহত হবে। রাতারাতি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কঠিন। নড়বড়ে এক কাঠামো, আমি বরং বলবো জনস্বার্থের বিপরীতমুখী এক কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আমাদেরকে দেশ পুনর্গঠনের কাজে হাত দিতে হয়েছে।’

এখান থেকে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেন জনগণই সত্যিকারার্থে সকল ক্ষমতার মালিক হন, ক্ষমতার উৎস হন। বিশ্ব দরবারে একটি মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়। তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষার্থী ও জনতার আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে সফল আমাদেরকে হতেই হবে। এর আর কোনো বিকল্প নাই।

আপনারা (দেশবাসী) ইতোমধ্যে জেনেছেন, জুলাই-আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও হতাহতের যে দুঃসহ ঘটনা ঘটানো হয়েছে তার স্বচ্ছ তদন্ত করতে জাতিংসঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধানকে বাংলাদেশে এসে তাদের তদন্ত শুরু করতে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তদন্তের প্রক্রিয়া এই সপ্তাহেই শুরু হবে। তাদের প্রথম দল ইতোমধ্যে এসে গেছে।

ছাত্র-জনতার বিপ্লতের স্মৃতি ধরে রাখা ও আহতদে চিকিৎসার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে যে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে তার অধিকাংশ প্রত্যাহার করেছি এবং আটক ছাত্র-জনতার মুক্তির ব্যবস্থা করেছি। পর্যাক্রমে মিথ্যা ও গায়েবি সকল ধরনের মামলার ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মানুষকে দুঃসহ ভোগান্তি থেকে মুক্ত করা হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সকল শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। সকল আহত শিক্ষার্থী ও জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে। সেই লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী দুইজন উপদেষ্টার সহায়তায় একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই কার্যক্রমের জন্য এবং গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে সরকার অতিদ্রুত ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আপনার সবার এবং বিদেশি অবস্থানরত ভাইবোনদের অনুদান এই প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করছি।

সব ধর্ম-মতের মানুষকে এক হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘কাউকে মতের কারণে, ধর্মের কারণে, লিঙ্গের কারণে শত্রু মনে করবো না। আমরা প্রতিটি নাগরিকের মতের অধিকার, বাকস্বাধীনতা, ভোটের অধিকার, মুক্তস্বাধীনতা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা-গঞ্জনার কথা বলতেও ভুলেননি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘যথাযথ সম্মান, নিরাপত্তার সঙ্গে প্রবাসীদের আসা যাওয়া নিশ্চিত করার ব্যাপারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সে ব্যাপারে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রবাসী ভাইদের আমার প্রতি আহ্বান, তারা যেন অফিসিয়াল চ্যানেলে অর্থ পাঠায়। অফিসিয়াল চ্যানেলে কীভাবে অর্থ পাঠালে আরও ভালো হবে সে ব্যাপারে তারা পরামর্শ দিতে পারে।’

সারাদেশের সব সেক্টরে ঘুষবাণিজ্য বন্ধের প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশ ঘুষের বন্যায় নিমজ্জিত। আমরা যদি এই জায়গায় কাজ করতে পারি তাহলে সেটার জন্য হলেও ভবিষ্যতে অন্তর্বর্তী সরকারকে মানুষ স্মরণ করবে। আপনারা (দেশবাসী) পরামর্শ দেবেন কীভাবে ঘুস-দুর্নীতি বন্ধ করা যায়।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় তথাকথিত দাবি আদায়ের আন্দোলন সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার কার্যালেয়ের সামনে সমাবেশ করা হচ্ছে। আপনাদের মনে গত ১৫ বছরের অনেক দুঃথ কষ্ট আছে আমি জানি। কিন্তু এসব বৈষম্য দূর করতে, রাষ্ট্রের সংস্কার করতে আমাদের কাজ করতে দিন। আপনার লিখিত দিন। আমাদের ঘেরাও করে প্রতিদিনের কাজে বাধা দিবেন না। দেশবাসী সবাই মিলে তাদের বুঝান। তাদের দাবির জন্য তারা যেন আমাদের কাজের বাধা না দেন। আমাদের কাজ করতে দিন। প্রতিটা সেক্টরে আমার বৈষম্য দূর করতে চাই। ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্টা করতে চাই।’

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রসঙ্গে নানা মহলের আলোচনার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবার মনে একটা প্রশ্ন আমরা কবে বিদায় নেবো। অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন ক্ষমতায় থাকবে। এটার জবাব আপনাদের কাছে। আমরা দেশ শাসনের মানুষ নই। আমরা নিজ পেশাতে আনন্দ পাই। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে পর তাদের আহ্বানে দায়িত্ব নিয়েছি। ছাত্ররা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। অপমার জনসাধারণ সেই নিয়োগে সমর্থন দিয়েছে। আপনার আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, আপনারা যখনই বলবেন আমরা চলে যাবো। কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করবো।’

ড.ইউনূস বলেন, ‘দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে। আমরা কী কী কাজ করবো তা আলোচনা করতে হবে। আমরা তার দিকনির্দেশনা পেতে পারি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক। এদিকে আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থাগুলো স্থিরতা না পেলে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে না। ভয়বহ বনায় নিমজ্জিত হয়েছি। এরজন্য আমরা জোরালোভাবে কাজ করতেছি।’

দুর্নীতির স্বরূপ সন্ধানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ১৫ বছরে উন্নয়নের নামে যত দুর্নীতি হয়েছে, ব্যাংক লুট হয়েছে, শেয়ারবাজার লুট হয়েছে, আর্থিকখাতে যত অনিয়ম হয়েছে সেসব বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমি একটি কমিটি করে দিয়েছি।

দেশের মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নিজ নিজ সাধ্যমতো সংকট উত্তরণে যেন সবাই নিজ নিজ মেধার ব্যবহার করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মতানৈক্যের কারণে যেন সেই সুযোগ আমরা হারিয়ে না ফেলি।

রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ প্রচার করে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম।