আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নির্বাচনি সমাবেশে হত্যা চেষ্টার শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই হামলায় ‘আমার এখানে থাকার কথা নয়, আমার মারা যাওয়ার কথা ছিল।’ একই সঙ্গে হত্যা চেষ্টায় বেঁচে যাওয়াকে ‘অবাস্তব অভিজ্ঞতা’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
সোমবার রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনের জন্য মিলওয়াকি যাওয়ার পথে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের সঙ্গে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। এসময় একটি সাদা ব্যান্ডেজ দিয়ে তার ডান কান ঢাকা ছিল, তবে তার সহযোগীরা কোনো ছবি তুলতে দেয়নি বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পোস্ট।
ভাগ্য বা ঈশ্বর তাকে রক্ষা করেছেন উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘সবচেয়ে অবিশ্বাস্য ব্যাপার ছিল, আমি আমার মাথা সঠিক সময়ে ঘুরিয়েছিলাম এবং সঠিক পরিমাণে ঘুরতে পেরেছিলাম।’
ট্রাম্প আরও বলেন, আহত অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তারা এমন কিছু আগে দেখেননি, এটিকে একটি অলৌকিক ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন তারা।
সমাবেশে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাবেক অগ্নিনির্বাপক কর্মী কোরি কম্পেরেটোরের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেছেন কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প হ্যাঁ বলেছিলেন।
এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার পেনসিলভানিয়ায় এক সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। মাত্র ২০০ ফুট দূর থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট নিচে লুটিয়ে পড়ে নিজেকে আড়াল করেন। এসময় সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা তার পাশেই ছিলেন। এরপর তাকে স্টেজ থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এই ঘটনায় একজন নিহত এবং দুই জন আহত হন।
ওই হামলার পর শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘এ সপ্তাহের শেষে যে জাতীয় সম্মেলন রয়েছে, সেই সম্মেলনের বক্তৃতা তিনি নতুন করে লিখছেন। সেখানে জো বাইডেনকে সমালোচনা করার পরিবর্তে “ঐক্যের” বার্তায় গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানান তিনি।
মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন এক্সামাইনারকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমি যে বক্তৃতা দেবো সেটা বিশেষ কিছু হতে যাচ্ছে। এই বক্তব্য এখনো দেওয়া হয়নি। তবে দিলে সেটা অসাধারণ বক্তব্যের মধ্যে একটি হতে চলেছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘এই বক্তব্যের বেশিরভাগ কথাই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিভিন্ন নীতিকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। সত্যি বলতে এই বক্তৃতা সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু হবে। দেশকে এক করার এটাই সুযোগ। আমাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
গোলাগুলির সেই মুহূর্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানতাম যে পৃথিবী এই ঘটনা দেখছে। আমি জানতাম যে ইতিহাস এর বিচার করবে এবং আমি জানতাম যে এই মানুষদের জানাতে হবে যে আমরা ঠিক আছি।’
এদিকে হামলার ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ওই হামলাকারী মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হন। রবিবার তার নাম প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই। তার নাম থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। তার বয়স মাত্র ২০ বছর।
মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির ভোটার কার্ডের তথ্য অনুযায়ী হামলাকারী ক্রুকস রিপাবলিকান দলের তালিকাভুক্ত সদস্য ছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি করতে ক্রুকস যে বন্দুকটি ব্যবহার করেছিলেন সেটি কিনেছিলেন তার বাবা। তবে তার সামরিক কোনো কর্মকাণ্ডে কখনো নিয়োজিত ছিল না বলে পেন্টাগন জানিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি