বিনোদন ডেস্ক: মুন্নাভাই এমবিবিএস’ সিনেমার সেই সার্কিটের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে? এ রকম একটা মজাদার চরিত্রকে কি এত সহজে ভোলা যায়? ২০০৩ সালে এই সিনেমা মুক্তির পর আরশাদ ওয়ারসি থেকে সার্কিট নামেই দর্শকের দরবারে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।
আজ ১৯ এপ্রিল সেই আরশাদ ওয়ারসির জন্মদিন। ৫৬ বছরে পা দিলেন অভিনেতা। সিরিয়াস চরিত্রের পাশাপাশি দর্শকের মুখে হাসি ফোটাতে এক্সপার্ট আরশাদ। মুন্নাভাই থেকে গোলমাল সর্বত্রই আরশাদের পারফরম্যান্স দর্শকের মন জিতে নিয়েছে।
তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এই সফল অভিনেতার জীবনে চলার পথটা মোটেই খুব একটা মসৃণ ছিল না। জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক আরশাদের জীবনের সেই স্ট্রাগলের কথা।
সৃজনশীল পরিবারেরই জন্মগ্রহণ করেন আজকে বলিউডের সফল অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর জীবনটা একেবারে পাল্টে যায়। বাংলো ছেড়ে এক কামরার ঘরে থাকতে শুরু করেন অভিনেতা। মাধ্যমিক দেওয়ার পর স্কুলও ছেড়ে দিতে হয় তাকে।
ছেলেবেলা থেকেই নিজের পেট চালানোর দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হয়েছিল আরশাদকে। একজন কসমেটিক সেলসম্যান থেকে ফটো ল্যাবেও কাজ করে দিন গুজরান করেছেন আরশাদ ওয়ারসি। বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে লিপস্টিক বিক্রি করতেন অভিনেতা।
একসময় তার পরিচয় হয় পরিচালক-প্রযোজক মহেশ ভাটের সঙ্গে। মহেশের ‘কাশ’ আর ‘ঠিকানা’ সিনেমায় তার সহকারী হিসাবে কাজ করেন আরশাদ। তবে তার কামানো সব টাকাই মায়ের ডায়ালিসিস করতে খরচ হয়ে যেত। দীর্ঘ অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করার পর আরশাদকে ছেড়ে চলে যান তিনি।
১৯৬৮ সালে মুম্বাইয়ের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আরশাদ। ছোটবেলাতেই পিতৃহারা হন তিনি। দশম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা করা হয়নি আরশাদের। টাকা পয়সার ছিল বড়ই অভাব। সেলসম্যান হিসাবে কাজ করে পড়াশোনা চালানো সম্ভব হয়নি তার। পেটের দায়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে লিপস্টিক পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে আরশাদকে। আজ তিনিই বলিউডের অন্যতম সফল অভিনেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
একটা সময় আরসাদ ওয়ারসি আকবর সামির নাচের স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। নিজস্ব প্রতিভার জোরেই ইন্ডাস্ট্রিতে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন রুপালি পর্দার পপুলার চরিত্রে সার্কিট ওরফে আরসাদ ওয়ারসি।
১৯৮৩ সালে ‘রূপ কি রানি চোরো কা রাজা’ সিনেমার টাইটেল ট্র্যাকের কোরিওগ্রাফার হিসাবে কাজ করেছিলেন আরশাদ। ১৯৯৬ সালে ‘তেরে মেরে সপনে’ সিনেমার হাত ধরে অভিনয় জগতে পা রাখেন। জয়া বচ্চনের থেকেও সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলেন অভিনেতা।
২০০৩ সালে ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’ আর ‘লাগে রাহো মুন্নাভাই’ ছিল আরশাদের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সিনেমা, সেরা চরিত্র। এছাড়া তার ঝুলিতে রয়েছে গোলামাল, দে ইশকিয়া, ইশকিয়ার মতো বলিউডের বেশ কিছু হিট সিনেমা।
মুন্নাভাইয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন আরশাদ ওয়ারসি। এছাড়াও জলি এলএলএলবি-এতেও তার অভিনয় দর্শক থেকে সমালোচকদের প্রশংসা কুঁড়িয়েছিল। ফলে বলিউডের সর্বত্রই আরশাদের নামডাক। বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ব্যবসাও করেন।