যশোরে ৩২ মামলার আসামি সন্ত্রাসী রমজান সন্ত্রাসীদের হাতে খুন

যশোর প্রতিনিধি
আলোচিত মাদক কারবারি ৩২ মামলার আসামি যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিম পাড়ার রমজান শেখ (৩০)। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষ দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ওই এলাকার বাবুর দোকানের সামনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে। ঘটনায় কে বা কারা জড়িত খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। তবে, নিহত রমজানের পরিবারের লোকজনের দাবি, এলাকার পিচ্চি রাজা ও তার সহযোগীরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তারা পিচ্চি রাজাসহ খুনিদের আটক ও শাস্তির দাবি জানায়। হাসপাতাল চত্বরে স্বজনদের কান্নাকাটিতে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ছিনতাই, মাদক বিক্রি, বোমাবাজি, হত্যাসহ ৩২ মামলার আসামি রমজান গত দু’বছর এলাকায় রমরমা মাদক কারবার শুরু করেন। একইসাথে ২০-৩০ জনের একটি মাদক সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দেন তিনি। মাদক কারবার ও গ্রুপ পরিচালনা করার কারণে প্রতিপক্ষ তৈরি হয় তার। পিচ্চি রাজা গ্রুপ ছাড়াও আরও দু’টি পক্ষের সাথে তার তুমুল দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তাদের মধ্যে সম্প্রতি একে অপরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে সূত্রের দাবি।
নিহত রমজানের শাশুড়ি বাসনা বেগম জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্থানীয় বাবুর দোকানের গলিতে পিচ্চি রাজার নেতৃত্বে চার-পাঁচজন এসে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে রমজানকে।
রমজানের মরদেহ বহন করে আনা এলাকার কয়েক যুবক জানান, তারা নিথর দেহটি উদ্ধার করে হাসপাতালে আনেন। হত্যায় কারা জড়িত তারা জানেন না বলে উল্লেখ করেন। তবে, এলাকার প্রচার হয়েছে এই হত্যাকান্ড পিচ্চি রাজা গ্রুপের কাজ। তার সাথে ঝমেলা ছিল রমজানের। হত্যায় যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
এদিকে, থানা সূত্র জানিয়েছে মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী পিচ্চি রাজা ও রমজান। ২০২২ সালে শহরের মুজিব সড়ক থেকে রমজানকে অস্ত্রসহ আটক করে র‌্যাব-৬ যশোরের একটি দল। মুজিব সড়কে পিকাসো কোচিং সেন্টারের পেছনে কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিল। তাৎক্ষণিক র‌্যাবের একটি টিম ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে রমজানকে আটক করে। ওই মামলায় জামিন পেয়ে মাদক কারবারসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয় রমজান।
পুলিশি সূত্র জানিয়েছে,রমজানের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ৩২ টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে সাতটি অস্ত্র, পাঁচটি বিস্ফোরক, একটি হত্যা, একটি ডাকাতি, চারটি হত্যা চেষ্টা ও সাতটি মাদকসহ অন্যান্য মামলা রয়েছে।
হত্যকান্ডের ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, রমজান হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। থানা পুলিশের কয়েকটি টিম মাঠে নেমেছে। নিহতের পরিবারের সাথেও কথা বলা হচ্ছে। হত্যাকান্ডে জড়িত কয়েকজনের নাম এসেছে। তাদের আটকে অভিযান চলছে। জড়িতরা দ্রতই আটক হবে।