যশোর প্রতিনিধি: যশোরে মায়া রানী (৩৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মারধরে আহত অবস্থায় রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় তার স্বামী পরিতোষ কুমার সানা। তবে মায়াকে তার স্বামী হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে নিহত মায়া রানীর ভাই সুশান্ত কুমার ম-ল। পরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেনি।
মায়া রানী সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বলাবাড়িয়া গ্রামের তরুণ কুমার ম-লের মেয়ে। তারা স্বামী-স্ত্রী যশোর উপশহর এলাকার সুফিয়া ভিলায় ভাড়া থাকতেন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
কোতোয়ালি থানার এসআই ইয়াসিফ আকবর জয় জানিয়েছেন, রোববার ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে মায়া রানীর স্বামী পরিতোষ কুমার সানা আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্ত্রীকে। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এরই মধ্যে মায়ার স্বামী সেখান থেকে পালিয়ে চলে যায়। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়।
এদিকে মায়ার ভাই সুশান্ত কুমার ম-লের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে অশান্তি ছিলো। তারই জের ধরে তার স্বামী পরিতোষ কুমার সানা মায়াকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহত মায়ার শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানা যায়।
এসআই ইয়াসিফ আকবর জয় আরো জানিয়েছেন, মুমূর্ষ অবস্থায় মায়াকে হাসপাতালে ফেলে রেখেই তার স্বামী পরিতোষ পালিয়েছে। সে কারণে হত্যা নাকি অন্য কোন কারণে মারা গেলো সেটা ময়নাতদন্ত ছাড়া কিছুই বলা যাবে না। স্থানীয়রা জানায়, উপশহর ৭ নং সেক্টরে নওশোর আলীর ৩ তলা ভবনের নিচতলায় বাথরুমের মধ্যে এক নারীর সাথে স্বামীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় প্রাণ দিতে হয়েছে এক সন্তানের জননী মায়া রানীকে। রোববার আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। এ নিয়ে অশান্তির এক পর্যায়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে স্ত্রী মায়াকে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার করে তড়িঘড়ি করে লাশ সাতক্ষীরার আশাশুনিতে নেয়ার চেষ্টা করে ঘাতক স্বামী পরিতোষ। অভিযুক্ত পরিতোষ সানা উপশহরে টিএমএসএস নামে একটি এনজিওতে চাকরি করতো। ধারণা করা হচ্ছে অফিসের কোনো নারীর কর্মীর সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। যা শেষ পর্যন্ত শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করলে ওই নারীকে সনাক্ত করাসহ আইনী ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে বলে দাবি এলাকাবাসির।
কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক পলাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, উপশহর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো মায়া রানী ও তার স্বামী পরিতোষ কুমার সানা। সেখান থেকে রবিবার মুমূর্ষ অবস্থায় মায়ারানীকে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বামী পরিতোষ। ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তবে কি কারণে মারা গেছে ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
এছাড়া তদন্ত করে যদি কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত পরিতোষ সানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনর সদস্যরা পরিতোষকে আটকের কথা স্বীকার করেনি।