সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ৪৬ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মামলা গ্রেফতার-২

যশোর প্রতিনিধি
সেনা বাহিনী থেকে চাকুরীচ্যুত একটি প্রতারক চক্র সেনা বাহিনীর অফিসার পদে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে অবসর প্রাপ্ত সেনা বাহিনীর সদস্যসহ তিনজনের কাছ থেকে নগদ ৪৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ভুক্তভোগীদের সহযোগীতায় দুই চক্রের দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। এরা হচ্ছে, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার হাওলাদারের ছেলে ফারুক হোসেন ও নওগাঁ জেলার সাপাহার থানার হোসেন ডাঙ্গা গ্রামের মৃত ফইমুদ্দিন মন্ডলের ছেলে শরিফুল ইসলাম। গ্রেফতারকৃত ও তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে বুধবার দিবাগত গভীর রাতে যশোর কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।
মামলাটি করেন,ঝালকাঠি জেলার কাঠাঁলিয়া থানার পশ্চিম চেচরী গ্রামের হারুন-ইর রশিদের ছেলে ইব্রাহীম খাঁন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন,তিনি পূর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরী করতেন। গত ২৩ মে বাদি সেনা বাহিনী হতে অবসর গ্রহন করেন। উল্লেখিত আসামীদ্বয় পূর্বে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে চাকুরীরত ছিল। সেই সুবাদে আসামীদ্বয়ের সাথে বাদির পূর্ব হতে পরিচয়। আসামীরা ঠক,প্রতারক ও মিথ্যবাদী প্রকৃতির লোক। আসামীরা টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে চাকুরী পাইয়ে দিবে বলে বাদি তাদের কথায় বিশ^াস স্থাপন করে। গত ২৫ মে দুপুর ১ টা ৪০মিনিটে যশোর শহরের মণিহার সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলায় করিডোরে বসে প্রতারক ফারুক হোসেন ও শরিফুল ইসলাম বাদির নিকট হতে কার্টিজ পেপারের মাধ্যমে চুক্তিপত্র কওে নগদ ১৬লাখ টাকা প্রদান করেন। বাদি ফারুক হোসেনের সাথে বিভিন্ন সময়ে তার মামাতো ভাইয়ের চাকুরীর জন্য যোগযাগ করলে পরবর্তীতে যখন লোক ভর্তি করবে তখন চাকুরী পাইয়ে দিবে বলে ফারুক হোসেন বাদিকে জানায়। পরবর্তীতে বাদিকে জানতে পারেন যে উক্ত আসামীদ্বয় বিভিন্ন মানুষকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ছে। পরবর্তীতে জানিতে পারে যে বাদির সহকর্মী পরিচিত জামিল মল্লিক ও শহিদুল ইসলামদ্বয়ের নিকট হতে চাকুরীর কথা বলে বিভিন্ন সময় জামিল মল্লিক এর নিকট হতে নগদ ১২লাখ টাকা এবং শহিদুল  ইসলামের নিকট হতে ১৮লাখ টাকা উল্লেখিত আসামীদ্বয় নগদ গ্রহন করেন। এক পর্যায়ে উক্ত আসামীদ্বয়ের সাথে বাদিসহ তার সহকর্মী বারংবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা বিভিন্ন ধরনের তালবাহনা করে আসছে। এক পর্যায়ে বাদি আসামীদ্বয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বাদিকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললে বুধবার ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় যশোর শহরের ম্যাগপাই হোটেলের ৩০৩ নং রুমে  আসামীদ্বয় আসতে বলে। বাদিসহ তার সহকর্মী জামিল মল্লিক ও শহিদুল ইসলাম উক্ত হোটেলেল কক্ষে আসে। আসামীদ্বয়ের অশোভন কথাবার্তা বুঝতে পারেন যে, তারা বাদি ও তার সহকর্মীদের  পাওনা টাকা দিবে না। বাদি আসামীদ্বয়ের কাছে টাকা চাইলে তারা বিভিন্ন তালবাহনা সহ নানাবিধ ভয়ভীতি প্রদান করতে থাকে। কথাবার্তার এক পর্যায় বাদি কৌশলে থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ এসে বাদি ও তার সহকর্মীদের কাছে ঘটনা শুনে প্রতারকদ্বয় দু’জনকে হেফাজতে গ্রহন করেন। তারা পুলিশের কাছে উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন বিভিন্ন দূর্নীতির কারনে গত অনুমান ৭ বছর পূর্বে আসামীদ্বয়ের সেনাবাহিনী হতে চাকুরী চলে যায়।  আসামীদ্বয়ের চাকুরী চলে যাওয়ার পর হতে বিভিন্ন মানুষের  কাছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। উক্ত দু’জন আসামী সেনাবাহিনী হতে চাকুরীচ্যুত হওয়া সত্বেও বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে বাদি ও তার সহকর্মীদের সাথে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা মূলকভাবে বিশ^াষভঙ্গ করে উল্লেখিত টাকা আত্মসাত করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ তাদেরকে বৃহস্পতিবার ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে।