যশোর প্রতিনিধি
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে’র প্যাথলজি ল্যাবে চালু হয়েছে মাদকাসক্ত নির্ণয়ে জন্য ডোপ টেস্টে। এর ফলে যশোরে চাকরি প্রত্যাশী ও পেশাদার চালকদের লাইসেন্স প্রাপ্তিতে জন্য আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্ছ মূল্য দিয়ে ডোপ টেস্টে করতে হবে না। মাত্র ৯৫০ টাকায় সরকারি খরচে এ প্রতিষ্ঠান থেকেই ডোপ টেস্টে করতে পারবেন চাকরি প্রত্যাশী ও পেশাদার লাইসেন্স প্রাপ্তি চালকরা।
মঙ্গলবার বর্নাঢ্য আনুষ্ঠানিকাতার মধ্য দিয়ে হাসপাতারের প্যাথলজি ল্যাবে ডোপ টেস্টের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক সিভিল সার্জন ডাক্তার আতিকুর রহমান খাঁন, সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মতর্কা ডাক্তার মীর আবু মাউদ। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সদস্য সচিব ডাক্তার মোহাম্মাদ গোলাম মোর্তুজা, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আনোয়ার হোসেন, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞা ডাক্তার আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধান অতিথি ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, স্বল্প সময়ে হাসপাতালে ডোপ টেস্ট চালু হওয়াই সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে। একই সাথে দালাল ছাড়াই সরকারি হাসপাতাল থেকে স্বল্প মূল্যে সেবা গ্রহীতারা নিজেদের প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট করতে পারবে।
এদিকে হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুয়ায়ী সরকাররি ও বেসরকারিসহ বিভিন্ন চাকুরিতে চুড়ান্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে এবং গাড়ীর চালকদের লাইসেন্স প্রাপ্তি ক্ষেত্রে সরকার মাদকাসক্ত নির্ণয়ে জন্য ডোপ টেস্টে বাধ্যতামূলক করেছেন। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা থাকলেও যশোরে প্রথম দিকে যশোর মেডিকেল কলেজে অস্থায়ী ভাবে ডোপ টেস্টে চালু হয়। কিছু দিন চলার পরে সরকারি ভাবে ডোপ টেস্টের কিট সরবরাহ না থাকায় ঐ প্রতিষ্ঠানে ডোপ টেস্টে বন্ধ হয়ে যায়। তখন চাকরি প্রত্যাশী ও পেশাদার ও অপেশাদার চালকরা পড়েন বিপাকে। পরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ চাকুরী প্রত্যাশীদের ও চালকদের র্দুভোগ লাঘবের জন্য বেসরকারি ক্লিনিক ইবনে সিনা ও সানরাইজে ডোপ টেস্টের জন্য অনুমোদন প্রদান করেন। পরে বেসরকারি ক্লিনিক উচ্ছ মূল্যে ডোপ টেস্টে পরীক্ষা চালু করেন। এতে করে অনেকে এক হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা দিয়ে ডোপ টেস্টে করতে সমস্য দেখা দেয়। কিন্তু সরকারি ভাবে এই পরীক্ষা জেলা হাসপাতালে চালু না থাকায় কষ্ঠ হলেও তার বেসরকারি ক্লিনিক থেকে ডোপ টেস্টে করতে বাধ্য হতেন। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে সরকারি ভাবে জেনারেল হাসপাতালে ডোপ টেস্টে শুরু হওয়াই চাকুরী প্রত্যাশীদের ও চালকরা স্বল্প মূল্যে পরীক্ষা করতে পারবে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক রাকিবুল হাসান বলেন, সরকার ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার পর থেকে যশোরে বেসরকারি ভাবে পরীক্ষা করাতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। অতিরিক্ত টাকা ব্যয়ের পাশাপাশি অনেক হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে চালকসহ সেবা প্রার্থীদের। কিন্তু আজ মঙ্গলবার থেকে জেনারেল হাসপাতালে হাতের কাছে সরকারি খরচে ডোপ টেস্টের সুযোগ পাচ্ছে সাধারণ চালকসহ সেবা প্রার্থীরা। এতে করে হয়রানি থেকে রক্ষা পায়েছে তাঁরা।
এব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি নিদের্শনা এবং কিট ক্রয়ের জন্য ৫লাখ পাকা বরাদ্দ পাওয়া পর হাসপাতালে ডোপ টেস্টের কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় পর্যায়ে কটেশনের মাধ্যমে ডোপ টেস্টোর কিট ক্রয় করা হয়েছে। হাসপাতালের স্টোরে রোববার টিক চলে আসায় আজ মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ডোপ টেস্ট চালু করা সম্ভব হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ বলেন, সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করায় এখন থেকে আর বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে পরীক্ষা করাতে হবে না সেবা গ্রহিতাদের। মাত্র ৯৫০ টাকায় হাসপাতালের ল্যাব থেকে সেবা গ্রহীতারা ডোপ টেস্ট করতে পারবে।