ঢাকা অফিস: আগুন সন্ত্রাসসহ দেশের মধ্যে প্রপাগান্ডার নির্দেশনা দেওয়ার অপরাধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তাকে ফিরিয়ে আনার কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিস পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত অবরোধের নামে যে আগুনসন্ত্রাস করছে তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এদেশে কালো মেঘ আসে আবার চলে যায়। জনগণের কাছে পারমাণবিক শক্তিও টিকে না। উদ্বেগ থাকবে, তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
দেশে একটা সংকট চলছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা একটি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাশিয়া ইউক্রেনসহ কয়েকটি দেশে যুদ্ধ চলছে। সারা পৃথিবীতে যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে। এ প্রভাবেও আমরা আছি। এ কারণে বাংলাদেশ কোনো অপরাধ না করেও যুদ্ধের কারণের কষ্ট পাচ্ছে। দেশের মধ্যে দ্রব্যমূল্য যে অবস্থা এ কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা মাঝেমাঝে বিদেশে যান সাহায্য সহযোগিতা চান। তিনি কিছু আনার জন্যই বিদেশে যান। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। এই দুঃসময়ে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা মতো আমাদের দেশের একটি রাজনৈতিক দল আন্দোলন করছে আগুন সন্ত্রাস করছে। দলটি ব্যর্থ হয়ে বারবার অতীতের মতো আগুনসন্ত্রাস করছে। এ দলটির দেশের জন্য সামান্যতম ভালোবাসা নেই। তাদের উদ্দেশ্য যেকোনো উপায় ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট করা।
২৮ অক্টোবরের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ২৮ তারিখে একজন পুলিশ সদস্য পিটিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বিএনপি। এটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায়। এমনকি তারা ৩০ জন সাংবাদিককে মারধর করেছে, প্রধান বিচারকের বাসায় হামলা করেছে।’
বিএনপিকে একটা প্রতারক দল বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি উল্লাপাড়ার এক পাগলকে ধরে এনে জো বাইডেনের বন্ধু বানিয়ে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আন্দোলনের নামে প্রতারণার নাটক যারা করে তাদের হাতে এদেশ কখনো নিরাপদ নয়। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।’
তিনি বলেন, বিএনপি বলেছিল আওয়ামী লীগ পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। কিন্তু এখন বিএনপিই পালাবার অলিগলি খুঁজে পাচ্ছে না। ২৮ তারিখে আমরা দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতারা অলিগলি দিয়ে পালিয়ে গেল তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা তোড়া বোড়া পাহাড়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতির কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতিতে ভুল আছে ঘাটতি আছে। তারা হয়তো সঠিক তথ্য পাননি। তারা বলছেন, বিএনপির আট হাজার নেতাকর্মী আটক করেছে। কিন্তু পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করা হবে, কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবে, আগুন সন্ত্রাস করবে তাদের আইনের আওতায় আনা যাবে না?’
‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন সঠিক তথ্য জেনে বক্তব্য দিলে ভালো হবে। আমর কারো সঙ্গে ঝগড়া করতে চাই না’-বলেন ওবায়দুল কাদের।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন চোরাগোপ্তা হামলা শুরু করেছে। এজন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। এখন থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকতে হবে। চোরাগোপ্তা হামলা নিয়ে ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যারা প্রতিদিন আগুন সন্ত্রাস করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। কিন্তু আগুনসন্ত্রাসীদের সঙ্গে যেন কোনো নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করা না হয়। যারা আগুনসন্ত্রাস করে তাদেরকে গ্রপ্তার করতে হবে। তাদের বিচার করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আবারও ক্ষমতা আসব। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। শেখ হাসিনা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব অপশক্তি প্রতিহত করব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।