ঢাকা অফিস: যুক্তরাষ্ট্র একাধিক বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই সমস্ত ব্যক্তিরা এবং তার পরিবারের সদস্যরা ভিসা পাবেন না যুক্তরাষ্ট্রের। যদি কারো ভিসা থেকে থাকে তাহলে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে।
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান। এরপর বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শীলার এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরপরই রাজনীতিক অঙ্গনসহ নানা মহলে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, কারা কারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসলো। বিভিন্ন সূত্র থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির পরিচয় জানা যাচ্ছে বটে তবে সেগুলো কোনো নিশ্চিত তথ্য নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত যিনি ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন তিনি স্বীকার না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত এই তথ্যগুলো প্রকাশ করা যাবে না।
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শীলার বলেছেন, ভিসা মার্কিন আইন অনুযায়ী একটি গোপনীয় বিষয়। কাজেই প্রকাশ্যে তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানাবেন না। কিন্তু মার্কিন দূতাবাসের বক্তব্যের সঠিকতা কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বিভিন্ন দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে তা তারা প্রকাশ্যেই করেছে। বিশেষ করে মিয়ানমারের একাধিক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নাম ধরেই করা হয়েছে।
এর আগে র্যাব এবং র্যাবের ছয় কর্মকর্তার ওপর যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিলো তা প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়েছিলো। এখন শীলার কেনো এটি বলছেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তবে যে কোনো ব্যক্তি তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আছে কি নাই তা দুইভাবে জানতে পারেন। প্রথমত, যদি এখন তার মার্কিন ভিসা থেকে থাকে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বা ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস তাকে ই-মেইল বার্তার মাধ্যমে বা মেসেজের মাধ্যমে তার ভিসা স্থগিতের কথা জানিয়ে দিবে এবং তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করতে পারবেন না বলে বার্তা দেয়া হবে। যদি কোন কারণে এই বার্তা না দেয়া হয় তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি যখন ভ্রমণ করতে যাবেন তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রাককালেই শেষ ইমিগ্রেশনে তাকে জানানো হবে যে তিনি ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছেন। তার যদি ভিসা থেকে থাকে তাহলে তার ভিসা তথ্যাদি সংক্রান্ত ফাইলের মধ্যেই ভিসা বাতিলের কথা থাকবে। কাজেই তার ভিসা যাচাইয়ের জন্য স্ক্যান করা হবে। তখন সাথে সাথে ভিসা বাতিলের তথ্যটি ভেসে উঠবে।
আর তিনি যদি ভিসা প্রাপ্ত না হয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষত্রে তিনি কোনো মেইল বার্তা বা কোনো কিছুই পাবেন না। তিনি যখন ভিসা গ্রহণ করতে যাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বা মার্কিন ভিসা আবেদন করবেন তখন তিনি ভিসা প্রত্যাখ্যাত হবেন। শুধু তিনি নয়, তার পরিবারের সদস্যরাও ভিসা প্রত্যাখ্যাত হবেন। মূলত ভিসা নিষেধাজ্ঞাটি দেয়া হয়েছে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য। যারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে বা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে তাদেরকে রোহিত করার জন্যই ভিসা নিষেধাজ্ঞা একটি কৌশল। তবে কেউ ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন কিনা তা তিনিই জানবেন অন্য কেউ নয়।