যশোরে জিনের ভয় দেখিয়ে গল্প সাজিয়ে ১৬লাখ টাকা

যশোর প্রতিনিধি 
একটি প্রতারক চক্র শহরের আরএন রোডস্থ মটর পার্টস ব্যবসায়ী রাজু হোসেনকে টক্কর সাপ ও জিনের গল্প শুনিয়ে পর্যায়ক্রমে ১৬লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জনগণ দুই প্রতারককে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এরা হচ্ছে, যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি মোল্লাপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে নাঈম হোসেন ও একই উপজেলার শেখহাটি তরফ নওয়াপাড়ার তাইজুল ইসলামের ছেলে ইনছান আলী। এ ঘটনায় কোতয়ালি থানায় শুক্রবার ৪ আগষ্ট দুপুরে মামলা করেছেন রাজু হোসেনের বড়ভাই সদর উপজেলার সুলতানপুর (বাবুপাড়া) গ্রামের শাহ্ আলমের ছেলে তিতাস উদ্দীন। গ্রেফতারকৃত দুই প্রতারককে বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন,আসামী দু’জন গত অনুমান ১১ মাস পূর্ব হতে প্রতারনা পূর্বক ভীতিহীন গল্প সাজিয়ে কৌশলে টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছে। বাদির আপন ছোট ভাই রাজু হোসেন যশোর শহরের আরএন রোডে নিজস্ব মটর পার্টস এর দোকানে ব্যবসা করে। নাঈম হোসেনের সাথে চক্রের সদস্য ইনছান আলীর পূর্ব থেকে পরিচয় থাকায় বাদির ভাই রাজু হোসেনকে গত ১১ মাস পূর্বে নাঈম হোসেনের সাথে বাদির ভাইকে পরিচয় করে দেয়। বাদির ভাইকে টক্কর সাপ ও জিনের গল্প শুনিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য আসামীদ্বয় গল্প সাজিয়ে রাজু হোসেনকে বিভিন্নভাবে ফুসলাতে থাকে। রাজু হোসেন আসামীদের কাল্পনিক গল্প বিশ^াস না করায় তার একমাত্র ছেলে রাজবীর (৮মাস) মারা যাবে বলে ভয় দেখাতে থাকে। বাদির ভাইয়ের শিশু সন্তানকে বাঁচাতে হলে আসামীদ্বয়কে জিনের বাদশার মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা দিতে হবে বলে সুকৌশলে চাইতে থাকে। এক পর্যায়ে রাজু হোসেন আসামীদ্বয়ের কথায় ভয় পেয়ে ও একমাত্র সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রাক সাড়ে ১১ টায় সুলতানপুর বাবু পাড়াস্থ বাদির বাড়ির পূর্ব দিকে কলাবাগানের জমির পশ্চিম দক্ষিণ কোনে আসামীদ্বয়ের জিন ধানের আসন হতে অত্যন্ত সুকৌশলে রাজু হোসেনের নিকট হতে প্রথমে ২লাখ টাকা গ্রহন করে। এর পর হতে পর্যায়ক্রমে ঐ একই স্থানে আসামীদ্বয় জিন ধানের আসনে বসে কথিত মানুষ পোড়ানোর তেল ক্রয়ের জন্য টাকা চেয়ে টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে। আসামীদ্বয় তাদের আসনের পাশের্^ মানুষ পুড়ানোর কথিত তেল ছিটিয়ে শেষ হয়েছে বলে আরো মানুষ পোড়ানোর তেল লাগবে বলে টাকা চেয়ে ভয় দিতে থাকে। রাজু হোসেন তার শিশু সন্তানের জীবন রক্ষার্থে গত ২ আগষ্ট দুপুর পৌনে ১ টায় ওই একই স্থানে জিন ধানে বসে রাজু হোসেনের নিকট হতে ২৫ হাজার টাকা নেয়। আসামীদ্বয় এভাবে ১৬লাখ টাকা হাতিনেয় নেওয়ার পরে কোন উপায় না পেয়ে রাজু হোসেন তার বড় ভাই বাদিকে জানায়। বাদি ও পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় লোকজনসহ আসামীদ্বয়কে অনুসন্ধান করার এক পর্যায় ৩আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা বেজে ৫৫ মিনিটের সময় জমিতে উক্ত ঘটনাস্থলে আসামীদ্বয়কে পেয়ে ঘটনার বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সত্যতা প্রকাশ করে। আসামীদ্বয় ১৬লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাগিদা করলে টাকা ফেরত দিতে সম্পূর্ন অস্বীকার করে। এ ঘটনা জানতে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাদের দু’জনকে মারপিট করে পরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে প্রতারক দু’জনকে হেফাজতে গ্রহন করে। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সামনে আসামীদ্বয় ঘটনার সতত্যা স্বীকার করেন।