জার্মানিতে পাঠানোর নামে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় ও বিক্রির অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা

যশোর প্রতিনিধি 
যশোরে চৌগাছার হাজিপুর গ্রামের ইরাক প্রবাসী আবু শরীফকে জার্মানিতে পাঠানোর নামে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় ও বিক্রির অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার অপহৃত আবু শরীফের ভাই আরিফ হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সালমান আহম্মেদ অভিযোগের তদন্ত করে সিআইডি পুলিশকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলো, মুন্সিগঞ্জ সদরের বাগবাড়ি গ্রামের, নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাহিদা বেগম, মৃত জুলহাস মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া, নারায়নগঞ্জ সোনারগার মোগরচর গ্রামের রুহুল আমিনের স্ত্রী দিনারা কাতুন, আব্দুস সামাদের ছেলে জসিম উদ্দিন, নুরুল ইসলামের ছেলে সাব্বির আহম্মদ, আব্দুস সামাদের ছেলে রুহুল আমিন সোহাগ, গাজীপুর শ্রীপুরের পহলাদপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ও তার স্ত্রী শিরিনা সুলতানা।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৩ সালে আবু শরীফ কাজ নিয়ে ইরাকে যান। ইরাকে অবস্থানকালে আসামি সাব্বির, রুহুল আমিন, আনোয়ার হোসেনের সাথে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসমিরা আবু শরীফকে সাড়ে ৪হাজার ডলারে জার্মানিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। তাদের দেয়া প্রস্তারে রাজি হয়ে সাব্বির, রুহুল ও আনোয়ারকে সাড়ে ৪ হাজার ডলার পরিশোধ করলে তাদের পরিচিত রাজু ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আবু শরীফকে বাগদাদ শহরের নিয়ে একটি ভবনের ১০ম তলার একটি কক্ষে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরদিন সকালে সাব্বির, রুহুল, আনোয়ার ও রাজু কক্ষে ঢুকে প্রথমে পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তাকে মারপিট করে বাড়িতে ফোন দিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আবু শরীফকে উদ্ধার করতে বাড়ির লোকজন তাদের দেয়া ৬টি বিকাশ নম্বরে ৪ সেপ্টেম্বর ৩ লাখ টাকা ও পরদিন আসামিদের দেয়া অপর ৬ টি বিকাশ নম্বরে আরও তিন লাখ টাকা পাঠানো হয়। ৮ সেপ্টেম্বর আসামি সাব্বির ফোন করে আরও ২ লাখ টাকা নিয়ে মুক্তি দেয় হয়েছে বলে জানায়। আবু শরীফ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ফিরে আসেন। তিনি জানিয়েছেন আসামিরা মুক্তিপণের টাকা নিয়ে তাকে মুক্তি না দিয়ে এক বছরের জন্য বিক্রি করে দিয়েছিল। বিনা বেতনে এক বছর কাজ শেষে তারা মুক্তি দেয়ায় তিনি নিস্ব হয়ে দেশে ফেরেন। এরপর বিকাশ নম্বরগুলো অনুসন্ধান করে আসামিদের নাম ঠিকানা উদ্ধার করে অপহণের বিষয়টি অবহিত করা হয়। গত ২৬ জুন সাহিদ, নুরুল, দিনারা, শিরিন রিপন, জসিম চৌগাছায় এসে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেয়। মীমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে অপহৃত আবু শরীফের ভাই আদালতে এ মামলা করেছেন।