যশোরে অষ্টোদশী বিবাহিতাকে দিয়ে যুবককে ফাঁদে ফেলে চাঁদাদাবি মোটর সাইকেল কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা আটক-২

যশোর প্রতিনিধি 
এক বিবাহিতা অষ্টোদশীকে দিয়ে একটি চক্র বিভিন্ন যুবকদের সাথে প্রেমসহ সম্পর্ক তৈরী করে ফাঁদে ফেলে নগদ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এক পর্যায় মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে। ইমন হোসেন নামে এক যুবকে ফাঁদে ফেলে আড়াইলাখ টাকা চাঁদা দাবি করে  অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ ও মারপিটের ঘটনায় এক তরুনীসহ চক্রের ৭ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ  চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে। এরা হচ্ছে,  যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া কাঁঠালতলার অহিদুজ্জামান ওরফে শেখ তৌহিদুজ্জামানের ছেলে ওহিদুল ইসলাম রাব্বী, একই এলাকার আলমগীর  হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন ছাব্বির ও চাঁচড়া মধ্যপাড়ার মৃত হারুনের ছেলে সোহান। রোববার ৯ জুলাই রাতে মামলাটি করেন, যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া বাবলাতলা এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ইমন হোসেন।মামলার আসামীরা হচ্ছে, শহরের কাজীপাড়া ( গোলামপট্টি) এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে ইয়াছিন মোহাম্মদ কাজল, নড়াইল জেলার সদর উপজেলার শেখহাটি বাজারস্থ সিদ্দিক মোড়লের মেয়ে মিম,যশোর শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া কাঠালতলার ওহিদুজ্জামানের ছেলে ওহিদুল ইসলাম রাব্বী,পুরাতন কসবা কাজীপাড়া কাঠালতলার আলমগীর হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন ছাব্বির,সদর উপজেলার চাঁচড়া খামারপাড়ার রিপন হোসেনের ছেলে জীবন, একই এলাকার গনি এর ছেলে রাইফুল ও একই এলাকার মৃত হারুনের ছেলে সোহানসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, তিনি নতুন হাট কলেজে বিএম শাখায় এইচএসসি ১ম বর্ষে পড়াশুনা কনে। ইয়াছিন মোহাম্মদ কাজল, ওহিদুল ইসলাম রাব্বী ও সোহান এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। তারা এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড করে বেড়ায়। মিম একজন প্রতারক। সে নিজের বিবাহের কথা গোপন করে বিভিন্ন ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায় করে বেড়ায়। মিমের সাথে বাদির ঘটনাচক্রে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর অনুরুপভাবে তার বিয়ের কথা গোপন রেখে সে অবিবাহিতা বলে বাদির সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে। তারপর কিছুদিন পর বাদি জানতে পারেন মিমের স্বামীআছে। তারপর থেকে বাদি  মিমের সাথে কথাবার্তা ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে মিমের সাথে বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ জীবন, রাইফুল ও সোহানের মধ্যস্থতায় মিমাংসা করে নেয়। মিমাংসার পর মিম, আরাফাত হোসেন ছাব্বির, জীবন ও রাইফুল বাদির কাছে আড়াইলাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বাদি চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মিমের দ্বারা বাদির বিরুদ্ধে মামরা করে ক্ষতি করার ভয়ভীতিসহ জীবন, রাইফুল ও সোহান ইয়াছিন মোহাম্মদ কাজল ও ওহিদুল ইসলাম রাব্বীকে নিয়ে প্রায় সময় বাদির চলাফেরার রাস্তায় দেখা হলে চাকুর ভয়ভীতি দেখায়ে মারপিট খুন জখমের হুমকীসহ বাদির নিকট তাদের পূর্বের দাবীকৃত চাঁদার টাকা চাই। বাদি আসামীদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে আসামীরা বাদিকে খুন জখমসহ বাদির ক্ষতি সাধন করার হুমকী দিতে থাকে। গত ২০ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় বাদি তার নিজের লালসাদা এফজেড মোটর সাইকের যার নং (যশোর ল-১২-২৬৬৯) যোগে যশোর শহরের কাজীপাড়া চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এমএম কলেজের ছাত্রাবাসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আসামীরা তাদের সহযোগীদের নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উক্ত স্থানে বাদিতে পথরোধ করে মোটর সাইকেল দাঁড় করায় এবং সকল আসামীরা বাদিকে এলোপাতাড়ীভাবে কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে এবং আসামীরা চাকু বের করে চাকুর ভয়ভীতি দেখিয়ে বাদির নিকট পূর্বের দাবীকৃত আড়াইলাখ টাকা চাই। বাদি চাঁদার টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় ইয়াছিন মোহাম্মদ কাজলের হুকুমে ওহিদুল ইসলাম রাব্বী মোটর সাইকেলের চাবিসহ রেজিষ্ট্রেশনপত্রসহ মোটর সাইকেল চাঁদার টাকা বাবদ নিয়ে নেয় এবং বাদিকে চাকু দেখিয়ে খুন জখমের হুমকী দিয়ে বাদিকে গোপন করার উদ্দেশ্যে আসামীরা যোগসাজস করে জোর পূর্বক ধরে ঘটনাস্থলের পাশে ছাত্রাবাসের মধ্যে পুকুরের পূর্বপাশে নিয়ে আটক রাখে এবং বাদির বাড়ি থেকে বাকী চাঁদার টাকা এনে দিতে বলে। বাদি প্রাণের ভয়ে তার মা মোছাঃ ঝর্না বেগমকে কল দিয়ে বিষয়টি জানালে বাদির মাতা মৎস ব্যবসার নগদ ৮০ হাজার টাকা আনলে আসামীরা চাঁদা বাবদ নিয়ে রাব্বী একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে বাদির সাক্ষর নিয়ে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামীরা পরস্পর যোগসাজস করে মোটর সাইকেল,নগদ টাকা ও স্ট্যাম্প নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আসামীরা বাদিকে মোটর সাইকেলের বিষয় কাজ আছে বলে যশোর বিআরটিএ অফিসের বিপরীতে ফাকা রাস্তার উপর নিয়ে বাদিকে ইয়াছিন মোহাম্মদ কাজলের নামে নামক পত্তন করিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। বাদি রাজী না হওয়ায় আসামীরা বাদিকে খুন জখমের হুমকী দিলে বাদি পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা পুলিশ দ্রুত বিআরটিএর সামনে থেকে ওহিদুল ইসলাম রাব্বী ও আরাফাত হোসেন ছাব্বিরকে গ্রেফতার করে। অন্যান্য আসামীরা পালিয়ে যায়। থানা পুলিশ বাদির মোটর সাইকেল উদ্ধার করে আসামীদের নিয়ে থানায় আসলে বাদি ঘটনার বিষয়ে পরিবারের লোকজনদের সাথে আলাপ আলোচনা করে অজ্ঞাতনামা আসামীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আটককৃত দু’জনকে সোমবার ১০ জুলাই দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।