যশোর চৌগাছার নগরবর্ণিতে মাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছা উপজেলার নগরবর্ণি এলাকার একটি মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে কোটি টাকার মাছ মেরেছে দুর্বৃত্তরা। মাছের সঙ্গে এমন শত্রুতা করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসি। আর ঘের মালিকের দাবি, সন্ত্রাসীদের চাঁদা না দেওয়ায় তার এমন ক্ষতি করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলার চৌগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত একজন মৎস্য চাষি। উপজেলার নগরবর্ণি এলাকায় তার ২০ একর জমিতে মাছ চাষের প্রজেক্ট রয়েছে। এ প্রজেক্টের ২৩ বিঘার একটি পুকুরে পাবদা, টেংরা মাছের সঙ্গে সাদা মাছ চাষ করতেন তিনি। শুক্রবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার আগে একটি প্রাইভেটকার ও দুটি মোটরসাইকেলযোগে কিছু লোক ঘেরে আসে। তারা চলে যাওয়ার ঘণ্টা দুএক পর পুকুরের মাছ মরতে শুরু করে। সকালের মধ্যে পুকুরের মাছ মরে ভাসতে শুরু করে। এ সময় আশপাশের শত শত এলাকাবাসী এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বাকি মাছ পচে পানিতে ভাসছে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। খামারের কর্মীদের দাবি বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেটের কারণে পানিতে অক্সিজেন সংকটে মাছ মারা গেছে। খামারের কর্মীরা জানিয়েছে, ঈদের সময় ঘেরে লোকজন ঘুরতে আসে। শুক্রবার সন্ধ্যার আগে একটি প্রাইভেটকার ও দুটি মোটরসাইকেলযোগে ৬-৭ জন ঘেরে আসেন এবং ঘুরেফিরে দেখেন। তারা চলে যাওয়ার পর রাত ৯টার দিকে মাছ মরতে শুরু করে। তারা প্রথমে ভেবেছিলেন মাছ স্ট্রোক করেছে। চিকিৎসক ডেকে পুকুরের পরিচর্যা করা হলেও কোনো লাভ হয়নি। সকাল থেকে প্রচুর পরিমাণে মাছ মরতে শুরু করে। এক পর্যায় পচন ধরে মাছ পুকুরে ভাসতে শুরু করে। মাছের সঙ্গে এমন শত্রুতা করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলেন, মানুষের সঙ্গে মানুষের শত্রুতা হতেই পারে। তাই বলে সম্পদ ধ্বংস করে শত্রুতা মেটাতে হবে এটা কাম্য না। এভাবে ক্ষতি করায় রাষ্ট্রীয় ক্ষতিও হয়েছে।
আর ঘের মালিক আবুল কাশেমের দাবি করেন, উপজেলার মনমথপুর গ্রামের আওরঙ্গজেব চুন্নুর ছেলে শামীম ও তার বাহিনীরা তার কাছে চাঁদা দাবী করেন। চাঁদার টাকা না দেওয়ার কারনে তার এমন ক্ষতি করা হয়েছে।
তিনি বলেন,‘ঈদের আগের দিন আমার ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায় তারা। আমাকে না পেয়ে ফেসবুক লাইভে তারা আমার সহায় সম্পদের ক্ষতি করে নিঃস্ব করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। ঘেরে বিষ দিয়ে তারা আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সে সময় এ ঘটনায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হরিদাস কুমার দেবনাথ বলেন,‘আমি পুকুর পর্যবেক্ষণ করেছি। পানিতে পিএইচ এর মাত্রা খুবই কম। বিষ প্রয়োগের ফলে এমনটা সৃষ্টি হয়েছে। বিষের তীব্রতা এত যে মাছ ও জলজপ্রাণী শামুক-ঝিনুকও মারা গেছে।’
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, আমি ঘটনা শুনে প্রথমে একজন এসআইকে পাঠিয়েছিলাম, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। ঘের মালিকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি  তদন্ত চলছে খুব দ্রুতই দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#