যশোরে এসিড দিয়ে স্ত্রীর চোখ নষ্টের দায়ে স্বামী কামরুজ্জামানের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

যশোর অফিস
যশোরের মণিরামপুরের বাঙ্গালীপুর গ্রামের গৃহবধূ রাজিয়া খাতুনকে এসিড দিয়ে চোখ নষ্টের দায়ে স্বামী কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড- ও অর্থদন্ডের  আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। রোববার এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলম এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত কামরুজ্জামান বাঙ্গীপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, এসএসসি পাশ করার পর রাজিয়া খাতুনের বিয়ে হয় কামরুজ্জামানের সাথে। বিয়ের পর রাজিয়া স্বামীর সংসার করে যশোর এমএম কলেজ থেকে ¯ স্নাতক  (এমএ) পাশ করেন। এরপর তিনি বিসিএস এবং নিবন্ধনের জন্য ঢাকায় কোচিং করতে যান। ঢাকা শহরের স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার চালানো ব্যায়বহুল হওয়ায় স্বামী-সন্তানকে তার পিতার বাড়ি কাশিপুর গ্রামের রেখে যান। মাঝে মধ্যে তিনি বাড়িতে আসতেন। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি রাজিয়া খাতুন স্বামী-সন্তান নিয়ে পিতার বাড়ি ছিলেন। এ দিন ভোর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রাজিয়া খাতুনের চোখে আসামি কামরুজ্জামান চোখের ওষুদের পাত্রে (ড্রপে) রাখা এসিড দিয়ে দেয়। এ সময় রাজিয়ার চিৎকারে স্বজনরা ঘুম থেকে উঠে দ্রুত তার রুমের সামনে এসে দেখে কামরুজ্জামান পালিয়ে যাচ্ছে। ঘরে যেয়ে ড্রপ দেখে সকলের সন্দেহ হয় এসময় মাটিয়ে দুই ফোঁটা ফেলে তারা এসিড বলে নিশ্চিত হয়। রাজিয়া খাতুনকে প্রথমে যশোর পরে ঢাকায় নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রাজিয়া খাতুনের ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে কামরুজ্জামানকে আসামি করে এসিড অপরাধ দমন আইনে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় কামরুজ্জামানকে অভিযুক্ত ওই বছরের ৪ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তোবারেক আলী।
দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি কারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত কামরুজ্জামান কারাগারে আটক আছে।