যশোরের বাঘারপাড়ার আমজাদসহ চার রাজাকারের রায় রোববার নিরাপত্তাহীনতা সাক্ষী ও স্বজনেরা

যশোর প্রতিনিধি 
আগামী রোববার একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার প্রেমচারা গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্লাসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান মো.শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ তারিখ ধার্য করেন।
এদিকে, রায়কে সামনে রেখে এরই মধ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আমজাদ রাজাকারের লোকজন। তারা মামলার বাদী, সাক্ষী ও তাদের স্বজনদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এতে করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে শহীদ পরিবারের বাদী, সাক্ষী ও তাদের স্বজনদের। ইতিমধ্যে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়াটার্স, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী সুরক্ষা কমিটি, ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ যশোরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে,২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আমজাদ হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে। এ মামলায় আমজাদের বিরুদ্ধে তার গ্রাম ও আশপাশের গ্রামের ছয় জন সাক্ষ্য দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে আমজাদের পক্ষে বাঘারপাড়ার চিহ্নিত এক সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে বাদী, সাক্ষী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা করা হলেও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি প্রশাসন। যে কারণে বারবার ব্যাহত হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাক্ষী সুরক্ষা আইন। মামলার বাদী, সাক্ষী ও তাদের স্বজনদের নিরাপত্তার জন্য প্রেমচারা গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপিত হয়। বর্তমান সময়ে সেখানকার কিছু পুলিশ সদস্যের সাথে আমজাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর সখ্যতা গড়ে উঠেছে। যে কারণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগে চরম নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করেছেন আমজাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া ছয় জন।
মামলার বাদী ও সাক্ষীরা অভিযোগ করেন, আমজাদের রায়কে সামনে রেখে তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তারা। সাক্ষী ও তাদের স্বজনদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকির পাশাপাশি নাশকতার মামলায় জড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বেপরোয়া ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর অর্থের যোগান দেয় খুলনায় বসবাসকারী আমজাদের রাজাকারের একমাত্র ছেলে আনোয়ার হোসেন খোকন এবং পুত্রবধূ জোসনা বেগম।
মামলার সাক্ষী প্রেমচারা গ্রামের এহিয়ার রহমান বলেন, ‘রাজাকার আমজাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ায় তার লোকজন আমার চাচাতো ভাই তফসির মোল্লাকে গলাকেটে হত্যা করেছে। ভাই-ভাইপোকে কুপিয়ে জখম করেছে। উল্টো আমাদের ষড়যন্ত্রমূলক ১৬টি মামলায় জড়িয়েছে। আমার দোকান ভাঙচুর করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এখন আমজাদ রাজাকারের রায়কে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তাই নিরাপত্তা চেয়ে আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ করেছি।#