যশোরে মাদরাসা ছাত্র হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদন্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছা উপজেলায় মাদরাসা ছাত্র মারুফ (১৩) হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদন্ড ও ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি সহিদুল করিম ও মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার (৩ মে) এই রায় দেন।

২০১৬ সালের ১০ আগস্ট নিখোঁজ হয় মাদরাসা ছাত্র মারুফ হোসেন। এরপর ১৬ আগস্ট চৌগাছার কান্দি গ্রামের একটি মেহগনি বাগান থেকে তার মাথাবিহীন হাত-পা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর দিন মারুফের মাতা আবেরুন নেছা সাতজনের নাম উল্লেখসহ ও অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মারুফ চৌগাছা উপজেলার জগদিশপুর ইউনিয়নের স্বর্পরাজপুর গ্রামের মহিদুল ইসলাম তোতার ছেলে। সে স্বর্পরাজপুর দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণিতে পড়তো। এ ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো অজ্ঞাত আসামিদের নামে চৌগাছা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এক পর্যায়ে মামলাটি যশোর থেকে খুলনা দ্রুত ট্রাইবুনালে স্থানান্তর করা হয়। খুলনা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল ২০১৯ সালের ২৬ মে সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে মারুফের মাতা ওই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিল আংশিক মঞ্জুর করে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি  মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার  রায় দিয়েছেন। হাইকোর্টে সুলাইমান মন্ডল, আবুল বাশার, মো. বাবু ও আজাহারুল ইসলাম ওরফে বুড়োকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। হযরত আলি নামে আরেক আসামিকে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া- হয়েছে। আপিলকারীর আইনজীবী জানান, সাজাপ্রাপ্ত এই ৫ জনসহ ১০ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।
আদালতে আপিলকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এম এ মুনতাকিম ও চৌধুরী সামসুল আরেফিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
রায়ের পর আইনজীবী চৌধুরী সামসুল আরেফিন সাংবাদিদের জানান, মারুফকে কারা হত্যা করেছিল আসামি আজাহারুল ইসলাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে।  অথচ বিচারিক আদালত সেটি বিবেচনায় না নিয়ে নৃশংস ওই হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বেকসুর খালাস দেন। তিনি বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, চাক্ষুষ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্ট চারজনকে মৃত্যুদ- ও বয়স বিবেচনায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন।
খুলনার আদালত থেকে সব আসামি বেকসুর খালাস পায়। স্বামী দেশের বাইরে থাকেন। তাই ছেলে হত্যার বিচার পেতে হাইকোর্টে আপিল করেছিলাম।
রায়ের পর মারুফের মাতা তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, হাইকোর্ট চারজনের মৃত্যুদন্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট।  কার্যকর হলে খুশি হব।