কালীগঞ্জে পান চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ চোর না অন্যকিছু- ধুম্রজাল সৃষ্টি

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি 
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে পান চুরির সন্দেহে গনপিটুনিতে সূর্যমান (৫৪) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ অজ্ঞাত হিসাবে নিহতের লাশ উদ্ধারের পর সিআইডি টিমের সহযোগীতায় ফিঙ্গার প্রিন্ট সনাক্ত করে নিহত ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুরের মাধবপুর গ্রামের রামচন্দ্র বিশ্বাসের পুত্র।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশের ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের শালিখা গ্রামের বেশ কিছু লোকজন সূর্যমানকে মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনে। ভর্তির পর তারা তড়িঘড়ি করে চলে যায়। এদিকে আগে গ্রামবাসী পান চোর বলে চালিয়ে দিলেও নিহত সূর্যমানের পরিচয় মেলার পর এতোদুর থেকে তিনি কিভাবে চুরি করতে আসতে পারে তার মৃত্যু নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইদুল ইসলাম জানান, শালিখা গ্রামের পানের বরজে প্রায়ই পান চুরির ঘটনা ঘটে থাকে। ওইদিন বুধবার ভোরে পান চুরি সন্দেহে সূর্যমান নামের এক ব্যক্তিকে গনপিটুনী দিয়ে আহত অবস্থায় ফেলে রাখে গ্রামবাসী। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাকে কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় পরদিন ভোরে ওই ব্যক্তি মারা যান।
নিহতের ভাইপো রিপন বিশ্বাস মুঠোফোনে জানান, নিহত সূর্যমান বিশ্বাস একজন মানষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি । তিনি গত রবিবার থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এর আগেও তিনি কয়েকবার নিখোঁজ হয়েছেন। আবার বাড়িতে ফিরে এসেছেন। তবে তিনি কোন চোর নয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, গতকাল সকালে কিছু লোকজন আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। সে সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ তানভীরকে জানিয়েছিলেন তাকে মারপিট করা হয়েছে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুর রহিম মোল্ল্য জানান, ইতোমধ্যে সূর্যমানের লাশ উদ্ধারের পর সিআইডির মাধ্যমে পরিচয় সনাক্ত করেছে পুলিশ। স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারাও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পথে রওনা দিয়েছেন। তবে কিভাবে মারা গেছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ওসি আব্দুর রহিম আরও জানান,তিনি শুনেছেন বুধবার সকালে গনপিটুনিতে আহত অবস্থায় কয়েকজন লোক তাকে হাসপাতালে রেখে গেছেন। সর্বশেষ স্বজনরা আসার পর মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তিনি জানান।