আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার দেশটির পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ আস্থাভোটে জয়ী হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে যখন সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সরকারের আইনি লড়াই চলছে তখন বৃহস্পতিবার রাতে এ আস্থাভোট অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ১৮০ জন সংসদ সদস্য দেশ পরিচালনায় শাহবাজ শরিফের ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ ঘোষণা করেন। এরপর এক ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী তার দলের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন জোটের সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) চেয়ারম্যান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের নেতৃত্বে ‘পূর্ণ আস্থা পোষণ করে’ আইনপ্রণেতারা তৃতীয়বারের মতো আইনমন্ত্রী আজম নাজির তরারের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নির্বাচন পরিচালনার জন্য পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) জন্য ২১ বিলিয়ন রুপি মুক্তি চেয়েছে।
রেজোলিউশনটি সেদিনের আদেশে অন্তর্ভুক্ত ছিল না এবং একটি সম্পূরক এজেন্ডার মাধ্যমে হাউসের সামনে আনা হয়েছিল। প্রস্তাবটি পেশ করে ভুট্টো-জারদারি বলেন, সরকার সারা বিশ্বকে দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সংসদ সংবিধানের মধ্যে দাঁড়িয়েছে।
গত বছর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ১৭৪ জন সংসদ সদস্যের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ। সে হিসেবে এক বছরের মাথায় এসে ছয় জন সংসদ সদস্যের সমর্থন বেশি পেলেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে দেশে আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। বৃহস্পতিবারের আস্থাভোটের ফলাফলে কার্যত ইমরান খান নিজেই এখন বেকায়দায় পড়ে গেলেন। ইমরান আগাম নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করার জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে তার দলের নেতৃত্বাধীন প্রাদেশিক সরকার ভেঙে দিয়েছিলেন।
কিন্তু শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও ইমরান খানের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার বলছে, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নির্বাচনে আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটানোর অবস্থা নেই। সেইসঙ্গে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও নির্বাচন আয়োজনের জন্য অনুকূল নয়।
তবে ইমরান খানের পিটিআই দল মনে করছে, দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের ভরাডুবি ঘটবে এবং এ কারণেই সরকার নির্বাচন দিতে গড়িমসি করছে। এরমধ্যে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট এক রুলিংয়ে দেশে একটি নতুন নির্বাচন আয়োজনের সময়সীমা নির্ধারণ করতে সরকার ও বিরোধী দলগুলোকে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছে।