এক সময়ের অসচ্ছল  মিস্ত্রি এখন কোটিপতি

যশোর অফিস
আনিসুর রহমান। কয়েক বছর আগে অসচ্ছল জীবনযাপন করতেন। এনালগ পাইলিং মেশিনই ছিল তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন। অনেকেই তাকে আনিস মিস্ত্রি হিসেবেও চেনেন। বাড়ি ছিল সদর উপজেলার বাদিয়াটোলা গ্রামে। বাদিয়াটোলার সেই আনিস মিস্ত্রি এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। যশোর শহরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে প্লট ও ফ্ল্যাট। বর্তমানে বসবাস যশোর শহরের টিভিএস শোরুমে পেছনের দু’টি ফ্ল্যাটে। এই দু’টি ফ্ল্যাট তিনি কিনেছেন ৭০ লাখ টাকায়। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন ব্যবসার পাশাপাশি ঠিকাদারিও করছেন। আনিসুর রহমান আর কেউ না, যশোর শিক্ষাবোর্ডে প্রায় সাত কোটি টাকা আত্মসাতের মূল অভিযুক্ত হিসাব সহকারী আব্দুস সালামের খালু শ্বশুর। শিক্ষাবোর্ড কর্মচারীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, সালাম মোটা অঙ্কের অর্থ তার খালু শ্বশুর আনিসের হাতে তুলে দেন। তারা একসাথে পার্টনারশিপে ব্যবসা করতেন। সালাম সরকারি চাকরি করায় ঝুঁকিমুক্ত থাকতে তিনি চেক গ্রহণের মাধ্যমে টাকা দেন খালু শ্বশুর আনিসকে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই আনিস ভাগ্নি জামাই সালামের টাকায় এখন অঢেল বিত্তবৈভবের মালিক।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, যশোর শহরের আরবপুরে ৩০ লাখ টাকায় জমি কিনেছেন আনিসুর রহমান। আরবপুর দিঘিরপাড়ে তার ৮০ লাখ টাকা মূল্যের সম্পত্তি রয়েছে। তিনি শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে নতুন প্রতিষ্ঠিত আল-হায়াত হাসপাতালের ৫০ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছেন। টিভিএস শোরুমের পেছনের ছয়তলা বিল্ডিংয়ে ৭০ লাখ টাকা দিয়ে দু’টি ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি।
আনিসুর রহমান বর্তমানে শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তরে ঠিকাদারি করছেন। তিনি এখন সরবরাহ করছেন বেঞ্চ। অভিযোগ উঠেছে, তিনি সিডিউল মেনে বেঞ্চ দিচ্ছেন না। অত্যন্ত নি¤œমানের বেঞ্চ তৈরি করেছেন। সেই নি¤œমানের বেঞ্চ দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন আনিস। কিন্তু শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নি¤œমানের বেঞ্চ নিতে রাজি হননি। তারপরও নানা কৌশলে এসব বেঞ্চ দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সালাম চাকরিচ্যূত হওয়ার পর খালু শ্বশুর আনিসের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চান। কিন্তু আনিস তার পাওনা টাকা ফেরত না দিয়ে তালবাহানা করছেন। এ নিয়ে ভাগ্নি জামাই সালামের সাথে তার বিরোধ চলছে। সালামের স্ত্রী পাওনা টাকা ফেরত নিতে ইতিমধ্যে আনিসের বাড়িতে যান একাধিকবার। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার সেই টাকা ফেরত দেননি আনিস।
এ বিষয়ে জানতে সালামের ০১৯১৪-৬৬১৭৮৬ নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আনিসের ০১৯৩৪-৫০৩৩২১ নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ফার্নিচার যাচাই বাছাইয়ের জন্য ছয় সদস্যের কমিটি রয়েছে। কোনো ফার্নিচার নেওয়ার আগে কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করে। ঠিকাদার আনিসুর রহমানের দেয়া ফার্নিচারে কিছু ত্রুটি বিচ্যূতি ছিল। সেগুলো ঠিক করে ফার্নিচার সরবরাহ করতে বলা হয়।#