যশোর প্রতিনিধি: যশোরে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থেকে দেশ ধ্বংস করছে। আর বিএনপির দেশ বাঁচানোর জন্য আন্দোলন করছে। আওয়ামী লীগ দেশ টাকে মগের মুল্লুক বানিয়েছে। একদিকে সীমাহীন লুটপাট,দুর্নীতি আর অর্থ পাচারের করে দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অন্যদিকে গুম খুন, নির্যাতন নিপীড়নের মধ্য দিয়ে গোটা দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে। আজকে তারা রঙিন খোয়াব দেখছে আরেকটি একতরফা কিংবা ভোট ডাকাতি নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য । কিন্তু আওয়ামী লীগের রঙিন খোয়াব কোন দিন পূরণ হবে না। আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিক আমরা আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশের মাটিতে আর কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জুলমবাজদের সাথে অতীতে কোন আপোষ হয়নি আগামীতেও হবে না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী ছাত্রদলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ছাত্রদল আয়োজিত ছাত্র-সমাবশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশটি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে জন সমুদ্রে পরিণত হয়। জেলা ছাত্রদলের অধীনস্থ সকল ইউনিটের নেতাকর্মীরা ব্যানার,ফেস্টুন,প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ শুরুর বেশ আগে থেকে লালদিঘিসহ গোটা এলাকা দলীয় নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতির মধ্য দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশে ড. আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫১ বছর পরে এসেও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের কথা বলতে হয়। গণতন্ত্র,মানবাধিকার ,সংবাদপত্রে স্বাধীনতা, আইনের শাসন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলতে হয়। অথচ ভোটাধিকার, মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করেছিলেন। আওয়ামীলীগ মুক্তিযোদ্ধারের সেই অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে দেশে আইনের শাসনের পরিবর্তে জুলুমের শাসন চলছে। জুলুমবাজ সরকারের কথায় বন্দুক ওঠা নামা হয়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামীলীগের বিশেষ বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিচার বিভাগ পুরোপুরি ভাবে সরকার নিয়ন্ত্রিত মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির নূন্যতম নিশ্চয়তা নেই। মগের মুল্লুক কিংবা জুলুমবাজ সরকারের হুকুম পালনের জন্য তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যারা ক্ষমতায় থেকে জনগণের ওপর জুলুম , নির্যাতন, অন্যায় অপকর্ম করছে একদিন জনগণের কাছে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। বন্দুক কামান ব্যবহার করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা যায়, কিন্তু জনগণের মন জয় করা যায় না। জনগণ আওয়ামীলীগকে আর বিশ্বাস করে না। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বাড়াবাড়ি অনেক হয়েছে আর নয়। ক্ষমা চেয়ে জনগণের কাতারের আসুন। আপনাদের দুঃশাসনে জনগণ আজ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তাদের ধৈর্য্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, দুঃশাসন থেকে মুক্তির একটি পথ গণ অভত্থানের মাধ্যমে জুলুমবাজ সরকারের পতন নিশ্চিত করা । ধ্বংসের রাণীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, ছাত্রদলের গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। স্বৈরাচ্চার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের অগ্রণী ভুমিকা রয়েছে। গত এক যুগের অধিক সময় ধরে সরকারের নানা নির্যাতন,নিষ্পেষনণ সহ্য করে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মী বিএনপির সাথে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ,আইনের শাসন,মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। যতদিন দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস প্রবাহিত না হবে ততদিন তাদের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে। আরেক বিশেষ অতিথি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আজকে দেশে শিক্ষার পরিবেশ নেই। একদিকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের ক্যাডারা ভীতিকার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে। অন্যদিকে কয়েকগুণ শিক্ষার ব্যয় বেড়েছে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত,জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমানের সাগরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ ইমরানের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক সোহানুর রহমান শামীম, ছাত্রদল নেতা সুমন আহমেদ,আলমগীর হোসেন লিটন, আজিজুর রহমান,আশরাফুল আলম রানা, শামীম রেজা,নাইম উদ্দিন, ইমন হোসেন, নাফিজ ইকবাল ইশা,তরিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম,ওলিয়ার রহমান,কামরুজ্জামান, রাজিবুল হক তুর্য্য প্রমুখ।