যশোর প্রতিনিধি
বহু বিতর্কিত ল্যাবজোন স্পেশালাইজ্ড হসপিতালে আবারও অপচিকিৎসায় চম্পা রানী (৩৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সে চৌগাছা উপজেলার সলুয়া দাসপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক তাপস দাসের স্ত্রী।
মৃতের মা বকুল রানী জানান, হঠাৎ তার মেয়ে চম্পা রানীর দু’চোখের নিচে ফোলা দেখা দেয়। প্রথমে তারা গ্রামের ডাক্তার নয়াব আলীর কাছে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দীর্ঘদিন সেখানে চিকিৎসা করার পরও রোগীর কোনো উন্নতি না হওয়ায় গ্রাম ডাক্তার নয়াব আলীর পরামর্শে ২৬ ডিসেম্বর যশোর শহরের রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার দেখাতে আসে। সেখানে ডাক্তার তাদের জানান এ রোগীর চিকিৎসা এখানে হবে না। তাকে অপারেশন করাতে হবে। ওই দিনই রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মরত ইকবাল হোসেনের পরামর্শে রোগীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে অবস্থিত ল্যাবজোন স্পেশালাইজ্ড হসপিতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। সেখানে কর্মরত ডাক্তার আজাদুজ্জামান রোগী দেখে জানান কোনো সমস্যা নেই। রোগীর ছোট একটি অপারেশন করালে রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। পাঁচ হাজার টাকার চুক্তিতে রাতেই রোগীকে সার্জরি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসাদুজ্জামান ও অজ্ঞানের ডাক্তার মনিরুজ্জামান রোগীকে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। এ সময় কান ও নাক দিয়ে রক্তপাত হয়ে চম্পা খাতুনের মৃত্যু হয়। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান, রোগী এখনো বেঁচে আছে, রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা নিয়ে যেতে হবে। রোগীর লোক যখন বুঝতে পারে রোগী আর বেঁচে নেয়। মৃত রোগীকে খুনলা রেফার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তখন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীকে মৃত ঘোষণা করে তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে রোগীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে সলুয়া দাস পাড়ার মেম্বার উজ্জ্বল হোসেনের মাধ্যমে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মৃতের মা বকুল রানীর আভিযোগ, তার জামাই তাপস দাস দরিদ্র ভ্যান চালক। ডাক্তারের অপচিকিৎসায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। থানা বা সিভিল সার্জনের কাছে স্থানীয় এক নেতার কথায় লিখিত অভিযোগ করতে পারেননি।
ডাক্তার আসাদুজ্জামান জানান, রোগীর হার্টে আগে থেকেই সমস্যা ছিলো। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। নিয়ম মেনেই রোগীর অপারেশন করানো হয়েছিলো।
ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, তিনি লিখিত কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অপচিকিৎসা হলে কোনো স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেয়া হবে না।
এরআগে, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর এ প্রতিষ্ঠানের দালাল মনির জেনারেল হাসপাতাল থেকে জোর করে ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার পথে হুইলচেয়ার থেকে পড়ে স্বর্ণা নামের এক প্রতিবন্ধী তরুণীর মৃত্যু হয়।
