ঢাকা অফিস: বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘আজ দেখি অনেকেই এই নেতাকে ওই নেতাকে ধারণ করে, মেইনটেইন করে। এক নেতা অন্য নেতাকে কিসের মেইনটেইন করবে? একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলি—বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ এবং তাদেরকে ধারণ করা ছাড়া আর অন্য কাউকে মেইনটেইন করা যাবে না।
ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে বেলুন উড়িয়ে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা উপস্থিত আছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ৪৭ বছরের সবচেয়ে সাহসী ও দক্ষ নেতৃত্বের নাম শেখ হাসিনা। গত ৪৭ বছরের সবচেয়ে দক্ষ কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। তিনি হলেন সংকটের ক্রাইসিস ম্যানেজার।’
‘বাংলাদেশ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল কিছু মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে।’
বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে তাদের জ্বালা বেড়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের অপশক্তির বিরুদ্ধে খেলা হবে। এজন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামীকাল (বুধবার) থেকেই সকল পাড়ায়-মহল্লার, থানা-ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাহারা দিতে হবে।
‘কারণ জনগণের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। বিএনপি যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য সকলকে সতর্ক হতে হবে। বিএনপি শুধু দেশের বিরুদ্ধে বিদেশির কাছে নালিশ করে। তারা হলো নালিশ পার্টি।’
সর্বশেষ ২০১৮ সালের মে মাসে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়। একই বছরের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরীকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষণা করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটি। উন্নয়ন প্রকল্প থেকে চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে রেজওয়ানুল ও রাব্বানী ছাত্রলীগের পদ হারান।
তখন আল নাহিয়ানকে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাদের ‘ভারমুক্ত’ করে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।