ফুটবলের রাজা কিংবদন্তি পেলে জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে

আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিবেদক:
ফুটবল
পেলে ভালো আছেন
বিবিসি
ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে
ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলেফাইল ছবি
ফুটবল কিংবদন্তি পেলে এখন ভালো আছেন। পেলের ভেরিফারেড ইনস্টাগ্রাম পোস্ট সে কথাই বলছে। এর আগে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে জানায় ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সময় শনিবার ইন্সটাগ্রামে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে পেলে লিখেছেন, বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের ফুটবল খেলা দেখছেন তিনি। মাতৃভূমির ফুটবল দলের খেলাই তাকে ‘শক্তি’ জুগিয়েছে। এই ফুটবল কিংবদন্তি আরও বলেছেন, তিনি অনেক আশাবাদী এবং মনোবল এখনো মজবুত আছে।
এর আগে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কেমোথেরাপিতে ভালো সাড়া দিচ্ছে না ক্যানসার আক্রান্ত ৮২ বছর বয়সী পেলের শরীর ।
তবে পেলের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বন্ধুরা, আমি চাই সবাই শান্ত ও ইতিবাচক থাকুক।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি অনেক আশাবাদী। আমার নিয়মতি চিকিৎসা চলছে। মেডিকেল ও নার্সিং টিমের সদস্যরা যেভাবে আমার যত্ন নিচ্ছেন, সেজন্য আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।
তিনটি বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিলিয়ান এই ফুটবলার লিখেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তার ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস আছে। এছাড়া সারা বিশ্ব থেকে পাওয়া প্রতিটি ভালোবাসার বার্তা আমাকে ভরপুর শক্তি যোগাচ্ছে। আমি বিশ্বকাপে ব্রাজিলের খেলাও দেখছি। আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন
কিংবদন্তি পেলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশা
ব্রাজিলের ফুটবল কিংবদন্তি পেলে
ক্যানসারের সঙ্গে লড়তে থাকা পেলেকে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তাঁর অসুস্থতা কতটা জটিল, তা নিয়েও তৈরি হয় ধোঁয়াশা। ইএসপিএন ব্রাজিল পেলের অবস্থা উদ্বেগজনক বললেও সে খবর সঠিক নয় বলে জানান পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্তো। ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছিলেন, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে যে খবর দেওয়া হচ্ছে, তা সত্য নয়। নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই কিংবদন্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফুটবল থেকে আরও পড়ুন
পেলেব্রাজিলব্রাজিল ফুটবল দলফুটবল
মন্তব্য করুন
ব্রাজিল নিয়ে আরও পড়ুন
জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কিংবদন্তি পেলে
জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কিংবদন্তি পেলে
ব্রাজিলের আদিবাসী সম্প্রদায় যে কারণে ১৩ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছিল
ব্রাজিলের আদিবাসী সম্প্রদায় যে কারণে ১৩ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছিল
শ্রীমঙ্গলে ‘আর্জেন্টিনা’র বিপক্ষে ৫-২ গোলের ব্যবধানে ‘ব্রাজিল’–এর জয়
কাপ হাতে উচ্ছ্বসিত ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়েরা। শুক্রবার সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া মাঠে
নেইমারের ব্রাজিল ও রোনালদোর পর্তুগাল প্রতিপক্ষের অপেক্ষায়
নেইমারের ব্রাজিল ও রোনালদোর পর্তুগাল প্রতিপক্ষের অপেক্ষায়

করে আক্রমণে যেতে। তবে মনোযোগ ধরে রেখে অস্ট্রেলিয়া খুব বেশি সুযোগ দিচ্ছিল না আর্জেন্টাইনদের।

শুধু লিওনেল মেসিদের ঠেকিয়ে রাখা নয়, আক্রমণেও চোখ ছিল সকারুদের। কয়েকবার ওপরে উঠে আর্জেন্টাইন রক্ষণের পরীক্ষাও নিয়েছিল তারা। আর অস্ট্রেলিয়ার কৌশলের কারণে আর্জেন্টিনা চাইলেও অলআউট আক্রমণে যেতে পারছিল না।

ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিটে ৬১ শতাংশ বলের দখল রাখলেও একটির বেশি শট নিতে পারেনি আর্জেন্টিনা। সেই শটও অবশ্য লক্ষ্যে ছিল না। উইং এবং মিড—দুই দিক থেকেই আক্রমণে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করছিলেন মেসিরা। তবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাকলাইন ছিল অনড়।

জাদুকরের গোলেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ৩৫ মিনিটে লিড নিয়েছে আর্জেন্টিনা।

এর আগে বিশ্বকাপে মেসি ৮ গোল করলেও তার ১টিও নকআউট পর্বে ছিল না। সবগুলোই করেছেন বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে। তবে বিশ্বকাপের নকআউটে গোল না পেলেও সহায়তা করেছিলেন ৪টিতে।

দর্শকদেরও হাত তখন মাথায়। তারাও বুঝতে পারলেন লড়াইটা সেখানেই শেষ। শুরুতে ২ গোলে পিছিয়ে পড়লেও চমকে ভরপুর বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল পাশার দান উল্টে দিতে।

৭৬ মিনিটে ব্যবধান কমানোর পর সেই সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হয়। তবে ডামফ্রিসের গোলটিতে শেষ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা। যে কারণে ২০০২ সালের পর আবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ননটা অধরাই থেকে গেছে তাদের। অন্য দিকে ৮ বছর পর বিশ্বকাপে ফিরে দারুণ জয়ে বিশ্বকাপের শেষ আট নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডস।

গল্পের শুরুটাই অবশ্য ভিন্নভাবে করতে পারত যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল তারা। তবে গোলরক্ষককে একা পেয়েও সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক।

একটু পর আবারও কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র। গোল না পেলেও ম্যাচের প্রথম কয়েক মিনিট বেশ দাপট দেখিয়েছে মার্কিনিরা। তবে স্রোতের বিপরীতে ম্যাচের ১০ মিনিটে উল্টো গোল করে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।

দুর্দান্ত এক আক্রমণে ডামফ্রিসের কাছ থেকে ডি–বক্সের ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন মেম্ফিস ডিপাই। আক্রমণ তৈরি থেকে বল জালে জাড়নো পর্যন্ত ডাচ খেলোয়াড়েরা ২০ টি পাস সম্পন্ন করেন। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ থেকে হিসাব রাখার পর এটিই বিশ্বকাপে ডাচদের সবচেয়ে বেশি পাসের গোল।

পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি যুক্তরাষ্ট্র। তারা চেষ্টা করে ডাচ রক্ষণকে চাপ ফেলে সমতায় ফিরতে। তবে পাল্টা আক্রমণে নেদারল্যান্ডসও বের করে নিচ্ছিল ফাঁকা জায়গা। ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল তাদের সামনেও। ১৭ মিনিটে ডেলি ব্লিন্ডের প্রচেষ্টা পোস্টের ওপর দিয়ে যায়। ২১ মিনিটে আরও একবার গোলের সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা। এ সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও ধীরে ধীরে কমলা জার্সির দলটি নিয়ে নেয়।

যুক্তরাষ্ট্র মাঝ মাঠের দখল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করলেও, নিজেদের রক্ষণকে একেবারেই ভালোভাবে সামলাতে পারছিল না। ডিপাই–গাকপো–ব্লিন্ডদের প্রতিটি প্রচেষ্টায় কেঁপে কেঁপে উঠছিল মার্কিনিদের রক্ষণ–দুর্গ।

আরও পড়ুন
আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস জিতবে আজ
৪৩ মিনিটে আক্রমণে গিয়ে ডি–বক্সের একটু বাইরে থেকে নেওয়া টিমথি উইয়াহর শট ঠেকিয়ে দেন ডাচ গোলরক্ষক আন্দ্রিস নোপের্ট। তবে যুক্তরাষ্ট্র না পারলেও ভুল করেনি নেদারল্যান্ডস। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ডামফ্রিসের আরেকটি দুর্দান্ত অ্যাসিস্টে গোল করে ডাচদের জোড়া লিড এনে দেন ব্লিন্ড।

বিরতির পর ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। আগ্রাসী ফুটবলে ডাচ রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করছিল তারা। ৪৮ মিনিটে টিম রিমের দারুণ একটি প্রচেষ্টা গোল লাইন থেকে ফেরান কোডি গাপকো।

আরও পড়ুন
নেদারল্যান্ডস: ‘কমলা রং’ এবার যেতে চাইবে দূর, বহুদূর
পাল্টা আক্রমণে গিয়ে তৃতীয় গোলটি প্রায় করেই ফেলেছিল নেদারল্যান্ডস। যদিও ডাচদের সেই প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। একটু পর ডি–বক্সের কাছাকাছি জায়গা থেকে মার্কিন মিডফিল্ডার ওয়েস্টন ম্যাকেনির শট অল্পের জন্য পোস্ট উঁচিয়ে যায়। গোল না পেলেও একের পর আক্রমণে ডাচ রক্ষণকে অস্থির করে তুলছিল যুক্তরাষ্ট্র।

নেদার‍ল্যান্ডসের প্রচেষ্টা ছিল রক্ষণ সমালে আক্রমণে যাওয়ার। তেমনই এক আক্রমণ থেকে ৬১ মিনিটে ডিপাইয়ের প্রচেষ্টা হাত ছুঁয়ে বিপদ মুক্ত করেন মার্কিন গোলরক্ষক ম্যাট টার্নার।

৭১ মিনিটে অল্পের জন্য ব্যবধান কমাতে ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে একের পর চাপ তৈরি করে ৭৬ মিনিটে পুলিসিকের পাসে হাজি রাইটের পায়ে লেগে বল জালে জড়ালে এক গোল শোধ করে মার্কিনিরা। আরেক গোল করলেই লড়াইয়ে ফেরার সুযোগ বলে দুই উইং দিয়ে এগিয়ে গিয়ে বারবার ডাচ রক্ষণের পরীক্ষা নিতে শুরু করে তারা।

তবে ৮১ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ পেয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে ডাচদের ৩–১ ব্যবধানে এগিয়ে দিয়ে ম্যাচ একরকম শেষই করেন ডামফ্রিস। ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছেন এই ডাচ তারকা।

প্রথম দুটি গোলেও অ্যাসিস্ট ছিল তাঁর। এরপর দুই দলই পেয়েছিল গোলের সুযোগ। তবে কেউ আর জালের দেখা না পেলে কমলা উচ্ছ্বাসে ভেসে শেষ আটে চলে যায় নেদারল্যান্ডস।

ফুটবল থেকে আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ফুটবলনেদারল্যান্ডস ফুটবল দলযুক্তরাষ্ট্র ফুটবল দলকাতার বিশ্বকাপ ২০২২বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২কাতার বিশ্বকাপ
মন্তব্য করুন

নেদারল্যান্ডস ফুটবল দল নিয়ে আরও পড়ুন
ঘানার রক্ত ঝড় তুলেছে ‘কমলা’ ফুটবলে
দেখে নিন দ্বিতীয় রাউন্ডে কে কার মুখোমুখি, কখন
গ্রুপসেরা হয়ে শেষ ষোলোয় নেদারল্যান্ডস
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে কোন দলকে কী করতে হবে।

প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত