ঢাকা অফিস: গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞায় হাইকোর্টের জারি করা স্থগিতাদেশ আগামী সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। বুধবার (৩০ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
চেম্বার আদালতের এই আদেশের ফলে জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন জিয়াউল হক মৃধার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাঈদ আহমেদ রাজা।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করে আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। সোমবার এ বিষয়ের ওপর ফের শুনানি হবে।
গত ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ১নং প্রতিপক্ষ (জিএম কাদের), ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের গঠনতন্ত্রের আলোকে যেন পার্টির কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত এবং কোনো কার্য গ্রহণ করতে না পারে সে মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পরে এ আদেশ প্রত্যাহারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত।
আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ খারিজাদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জিএম কাদের। জেলা জজ এ আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন রাখলেন। কিন্তু আমরা ২৪ নভেম্বর দরখাস্ত দিয়ে বললাম ৯ জানুয়ারি রাখাতে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কারণ আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ আছে। অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। তাই আজকেই শুনানি করেন। আমাদের ২৪ তারিখের দরখাস্তটা জেলা জজ রিজেক্ট করে দিলেন। এর বিরুদ্ধে আমরা রিভিশন করেছি। আমরা হাইকোর্টে বলেছি ২৪ তারিখের আদেশটা অবৈধ। কোর্ট রুল দিলো আর ৩০ অক্টোববের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা অবৈধ।