চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের চৌগাছায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহারের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ৪টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ভূয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করলেও পরিচ্ছন্নতা বাবদ কোনো ব্যয় করেননি বলে জানায় উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তাগণ।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নারায়নপুর, সুখপুকুরিয়া, জগদেশপুর ও পাশাপোল ৪টি ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচ্ছন্নতা বাবদ ২০২১ সালের অক্টোবরের ৮ তারিখে ৯৯’হাজার ৮৪০ টাকা উত্তোলন করেন ( বিল নং-৯৯০৪), ২০২২ সালের এপ্রিলে ২বারে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬০০ ও ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা, মোট ৩ লক্ষ টাকা (বিল নং-২৩৯৯৪ ও ২৩৯৯৩), জুনের ২৭ তারিখে ৪৯’হাজার ৯২০ টাকা (বিল নং-২৮৫৪৫), একই মাসের ২৮ তারিখে ১ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা (বিল নং-২৮৮০৬) উত্তোলন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
এছাড়াও করোনা টিকা প্রদানের জন্য প্রতি ইউনিয়নে প্রচার বাবদ চলতি বছরের ২ জুন ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে ৩৩’হাজার টাকা (বিল নং-২৮৬৪৬) উত্তোলন করেন। একাধিক স্থানীয়রা জানায় টিকা প্রদানের জন্য শুধু মাত্র মসজিদের মাইকেই জানানো হয়েছে। তাছাড়া কোনো প্রচার বা অন্য কোনো ভাবে প্রচারণা করা হয়নি বলে জানায় এলাকাবাসী।
আরো জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ২৫ থেকে ৩০ দিন টিকাদান কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে দিনে ৩ টি করে ক্যাম্প তৈরী করে ৩ জন টিকাদান কর্মী (এইচএ, এফডাবলুএ, সিএইচসিপি, এসএসসিএমও) ও ২ জন ভলেন্টিয়ার দ্বারা কর্মসূচি পালন করা হয়। টিকাদান ও ভলেন্টিয়ারকর্মী সম্মানী ভাতা হিসেবে ৩০ শে জুন ৮’লক্ষ ৮২’হাজার টাকা (বিল নং-২৮৬৪৭) উত্তোলন করেন। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন প্রতিটি টিকাদান কর্মী সম্মানী ভাতা ৫’শত টাকা ও ভলেন্টিয়ারকর্মী ৩শত ৫০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও সিভিল সার্জনকে দিতে হবে বলে প্রতি টিকাদান কর্মী থেকে ১’শত ১০ টাকা করে কেটে রাখা হয়। সম্মানী ভাতা থেকে কোনো প্রকার টাকা কেটে রাখার নিয়ম না থাকলেও এমন কর্মকান্ডে কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের স ার হয়। এবিষয়ে একাধিক টিকাদান কর্মী জানান, আমাদেরকে সম্মানী হিসেবে ৫’শত টাকা দেওয়ার কথা ছিলো। এজন্য আমরা খুশি মনে জনগণের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। কিন্তু এখন দেখি সিভিল সার্জনকে ১’ শত ১০ টাকা করে দিতে হবে। সরকারী সম্মানীতে এমন টাকা কেটে নেওয়ার কোনো নিয়ম আছে কিনা আমরা জানতে চায়।
এবিষয়ে উপজেলা উপ-স্বাস্থ্য কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কৃষ্ণ অধিকারী, আল-আমিন ও মহিবুল ইসলাম বলেন, উপ-স্বাস্থ্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাবদ আমাদের কোনো অর্থ প্রদান করা হয়নি। চলতি বছর আমরা কোনো বিল জমা দেয়নি। কোনো টাকাও উত্তোলন করিনি। আমরা নিজেদের বেতনের টাকা দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে থাকি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লাকি বলেন, আমি এখনি কিছু বলতে পারবো না। বিষয়টি কি হয়েছে আমাকে খাতা কলম দেখে বলতে হবে, হঠাৎ করে কিছুই বলতে পারবো না। কিন্তু হাসপাতালের অনেক কাজ থাকে, যেগুলো হাসপাতাল দেখিয়ে বার বার বিল না করে অন্যান্য ভাবে বিল তৈরী করা হয়।