দুর্নীতি করে স্বাস্থ্য সহকারী আসাদুর রহমান কোটিপতি

যশোর প্রতিনিধি
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী আসাদুর রহমান অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য সহকারি অ্যাসোসিয়েশনের নেতা হওয়ার পর তিনি নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনে সফল হয়েছেন। বিগত দিনে ৪১ লাখ টাকা তছরুপের অভিযোগে তিনি ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন বরিশাল সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী জিয়াউল হাসান কাবুল। যার স্মারক নম্বর ০০.০১০০০০.৫০৩.২৬.২৭৪.২০১৯-২৫৮২৪। অভিযোগের তদন্ত হলেও এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জিয়াউল হক কাবুল জানান, স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের এনায়েত রাব্বি লিটন পক্ষের আহবায়ক কমিটির ক্যাশিয়ার ছিলেন আসাদুর রহমান। তখন তিনি যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় আসাদুর রহমানসহ তার অনুসারীরা সংগঠনের ৪১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। অর্থ লোপাটে তাকে সহায়তা করেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতা এনায়েত রাব্বী লিটন, মোর্শেদুল আলম ও হোসেন রাসেল। জিয়াউল হক কাবুল আরও জানান, অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তিনি ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ করেন। দুদুক থেকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ময়মনসিংহের সিভি—ল সার্জনকে। ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর তদন্ত বোর্ড সম্পন্ন হয়। জিয়াউল হক কাবুল জানান, সর্বশেস কয়েক দিন আগে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন তদন্ত প্রতিবেদন দুদক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের যশোর সদর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন ফেরদৌস জানান, বিগত দিনে আসাদুর রহমান সদর উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। ওই সময় সংগঠনের প্রায় ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। সংগঠনের অন্য নেতাদের চাপে পড়ে ৫৮ হাজার টাকা ফেরত দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আজ আবধি সেই টাকা ফেরত দেননি। মহিউদ্দিন ফেরদৌস আরও জানান, একজন স্বাস্থ্য সহকারী হয়েও আসাদুর রহমান ভিআইপি জীবন-যাপন করেন। যশোর উপশহর বি ব্লকে ৭ শতাংশ জমির ওপর তার দুই তলা বিশিষ্ট একটি আলীশান বাড়ি রয়েছে। এক ছেলে ঢাকার এআইইউবি ও মেয়ে বরিশালের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। দুই ছেলে মেয়ের লেখাপড়া খরচ মাসে ৪০ হাজারের বেশি টাকা খরচ করতে হয়। এছাড়া অন্যান্য খরচ তো আছেই। মাসে আনুমানিক ২৭ টাকার বেতন হলেও খরচের বাকি টাকা উৎস্য কোথায় তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে। অনিয়ম দুর্নীতি করে আসাদুর রহমান কোটিপতি বনে গেছেন। সূত্র জানায়, বর্তমানে আসাদুর রহমান স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশন যশোর জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্বে আছেন। নেতা হওয়ার সুবাদে তিনি বিভিন্ন তদবির বাণিজ্য করেন। স্বাস্থ্য বিভাগের উধ্বর্তন কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে তার সু সম্পর্ক আছে। প্রভাব খাটিয়ে তিনি কর্মস্থলে ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না। এসব বিষয়ে আসাদুর রহমান জানান, সংগঠনের টাকা আত্মসাৎ করেননি। ক্যাশিয়ারের দায়িত্বে থাকার কারণে তার ওপর অন্যায়ভাবে দায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো। তিনি কোন প্রকার অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ রটানো হচ্ছে।