আন্তর্জাতিক ডেস্ক মাধঘোপা নিউজ: ১১ বছরের বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার যুদ্ধে শান্তিপ্রতিষ্ঠা ও ইউক্রেনে আটকে পড়া শস্য রপ্তানির বিষয়ে বৈঠক করেছেন ইরান, রাশিয়া ও তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধানরা।
ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, গতকাল (মঙ্গলবার) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বৈঠক করেছেন।
গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরান ১১ বছর ধরে চলা সিরিয়া যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিম অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাইরে সফর করেছেন পুতিন। এর আগে তাজিকিস্তান সফর করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাজিকিস্তান সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুতিনের ফরেন পলিসি উপদেষ্টা বলেন, ‘খামেনির সঙ্গে আলাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে উভয়ের মধ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য আলোচনা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমাদের অবস্থান খুবই ঘনিষ্ঠ।’
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়ার ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর পশ্চিমা মিত্ররা। বিপরীতে ইরান, চীন এবং ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করছে রাশিয়া।
ইরানও পারমাণবিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে। এ কারণে ইরানও রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, ‘‘উভয় দেশের সন্ত্রাস মোকাবেলায় ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। যা আমাদের অঞ্চলে যথেষ্ট নিরাপত্তা দিয়েছে। পুতিনের সফরের মধ্য দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে।’
আর এরদোয়ানের সঙ্গে পুতিনের আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল কীভাবে ইউক্রেনে আটকে পড়া শস্য পুনরায় বিশ্বে রপ্তানি করা যায়।
আল জাজিরা জানায়, উত্তর সিরিয়ায় নতুনভাবে সামরিক অভিযান শুরু করতে পারেন বলে পুতিন ও রাইসিকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অবহিত করেছেন এরদোয়ান। যদিও তেহরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি নতুন সামরিক অভিযানের বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছিলেন। আর ক্রেমলিনের পক্ষ থেকেও এর বিরোধিতা করা হয়।
চলতি সপ্তাহের শেষে রাশিয়া, ইউক্রেন, তুরস্ক এবং জাতিসংঘ পুনরায় বিশ্বে শস্য রপ্তানি স্বাভাবিক করতে একটি চুক্তি করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত সোমবার জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া, ইউক্রেন, তুরস্ক এবং জাতিসংঘের মধ্যে শস্য রপ্তানির বিষয়ে সন্তোষজনক আলোচনা হচ্ছে । যদিও এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেস চুক্তির প্রয়োজনে ইস্তাম্বুলেও সফর করতে প্রস্তুত ।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার গুতেরেস ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছেন।