দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করলেন ঘাতক বাবু

যশোর প্রতিনিধি
প্রথমে স্ত্রী ও বড় মেয়ের গলা টিপে । ধস্তাধস্তি দেখে ছোট মেয়েটি চিৎকার শুরু করে। পরে গামছা দিয়ে ছোট মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাবু। ১৬ জুলাই শনিবার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক জহিরুল ইসলাম বাবু। তিনি আরও জানিয়েছেন পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। জহিরুল ইসলাম বাবু  যশোর  সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মশিউর রহমান বিশ্বাসের ছেলে।
জহিরুল ইসলাম বাবু আরও জানিয়েছেন, সে পেশায় একজন রড মিস্ত্রী ও মাদকাশক্ত। সে অভয়নগরের সিদ্দিপাশা গ্রামের শেখ মুজিবর রহমানের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বিথীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে বিথীর সাথে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ চলছিল। বিথী তার পিতার বাড়িতে থাকতে পছন্দ করত। আড়াই মাস আগে বিথী তার দুই মেয়ে নিয়ে পিতার বাড়ি চলে গেছে। অনিচ্ছা সত্তেও জহিরুল মাঝে মধ্যে তার শ্বশুর বাড়ি যেয়ে থাকতে হতো। এনিয়ে সংসারে চরম অশান্তি চলছিল। ১৫ জুলাই শুক্রবার দুপুরে স্ত্রী ও দুই মেয়ে জহিরুল তার বাড়ির উদ্দ্যেশে শ্বশুর বাড়ি থেকে রওয়ানা হয়। পথে বিথীর সাথে জহিরুলের পারিবারিক বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ড শুরু হয় দুই মেয়ের উপস্থিতিতে। এরমথ্যে স্ত্রী ও বড় মেয়ের গলা চেপে ধরলে চোট মেয়ে চিৎকার করছিল। এরপর তিনজনের গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে জানিয়েছে জহিরুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসছিলেন বাবু। চাপাতলা গ্রামে আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনে কলাবাগান ও ঘাসের জমিতে নিয়ে স্ত্রী বিথী ও বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন এবং শেষে ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লাশ তিনটি সেখানে ফেলে বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে ঘটনা জানান বাবু। এসময় তার বড়ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে গেলে বাবু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এ ঘটনায় নিহত বিথীর পিতা শেখ মুজিবর রহমান বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই উত্তম কুমার মন্ডল আটক আসামি জহিরুল ইসলাম বাবুকে শনিবার ১৬ জুলাই আদালতে সোপর্দ করেন। আদালতে জহিরুল ইসলাম বাবু দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। আদালতে বিজ্ঞ বিচারক বাবুকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।#