যশোর প্রতিনিধি
সদর উপজেলার বড় বালিয়া ঈদগাহ পাড়া এলাকার এক বাড়িতে চিহ্নিত উঠতি বয়সের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা শনিবার দিবাগত গভীর রাতে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাবুল আক্তার দুদু (৩৭)কে ডাক দিয়ে মোটর সাইকেলসহ অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ দাবিতে মারপিট করেছে। এ সময় ১লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরোঘুরি করে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলেও পুলিশ গ্যাংয়ের সদস্য মানিক হোসেন (২০) নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। সে বড় বালিয়া ডাঙ্গা পশ্চিমপাড়ার আইয়ূব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় অপহরনের শিকার বাবুল আক্তার দুদু বাদি হয়ে রোববার দুপুরে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা দিয়েছে। মামলায় আসামীরা হচ্ছে, গ্রেফতারকৃত মানিক হোসেন ছাড়াও বড় বালিয়াডাঙ্গা পশ্চিমপাড়ার জামিরুল ইসলামের ছেলে ইয়াছিন হোসেন, ইরফান হোসেনের ছেলে রাসেল হোসেন, আলম হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন, বাবুল হোসেনের ছেলে সবুজ হোসেন ও নতুন উপশহর এস ব্লকের সৈয়দ রওশন আলীর ছেলে সৈয়দ শামীম হোসেন ওরফে খোড়া শামীমসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জন।
যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে বড় বালিয়াডাঙ্গা ঈদগাহ পাড়ার বাসিন্দা মৃত ইজ্জাত আলী বিশ^াসের ছেলে বাবুল আক্তার ওরফে দুদু বাদি হয়ে মামলায় উল্লেখ করেন,তিনি যশোর আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজে এম,এল.এস.এস পদে কর্মরত। গত শনিবার ১৮ জুন রাত পৌনে ১২ টায় দুদুসহ তার পরিবারের সদস্যরা রাতের খাওয়া দাওয়া শেখ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হঠাৎ উল্লেখিত আসামীসহ তাদের অজ্ঞাতনামা ২/৩জন বাদির বাড়িতে প্রবেশ করে। বাদির নাম ধরে ডাকাডাকি করে। তাদের ডাকে ঘর হতে বের হয়ে আসার পর আসামীরা নিজেদের পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে ওয়ারেন্টের আসামী ধরতে এসেছে বলে জানায়। পরে বাদিকে তার ব্যবহৃত লাল রংয়ের বাজাজ ডিস কভার মোটর সাইকেল যার নং ( যশোর ল-৪৬০৮) নিয়ে আসতে বললে বাদি সরল বিশ^াসের তার মোটর সাইকেল নিয়ে বাইরে আসে। আসামীদের সাথে তিনটি মোটর সাইকেল ছিল। বাদি আসামীদের সাথে রাত ১২ টার পর রওনা করে আসামীরা বাদিকে প্রথমে সাথে নিয়ে রাত সোয়া ১২ টার পর সদর উপজেলার ছোট শেখহাটি গ্রামের জনৈক শাহিনের মুদি দোকানের সামনে ব্রীজের পূর্ব পাশে^ পৌছালে আসামীরা সেখানে মোটর সাইকেল থামায়। এক পর্যায় আসামীরা বাদিকে হত্যা করার ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাদির কাছে চাঁদা স্বরুপর ১লাখ টাকা দাবি করে। বাদি তখন বলে আপনারা তো পুলিশের লোকজন আপনারা একি বলছেন আপনারা আসামী ধরবেন না। এই কথা বলার সাথে সাথে আসামীরা হেসে হেসে বাদিকে বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র প্রদর্শন করে বাদিকে বলে তুই টাকা দিবি কিনা বল না হলে তোর ব্যবহৃত মোটর সাইকেল চাঁদা স্বরুপ তাদেরকে দিয়ে দে। এই বলে বাদির শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ী কিল, ঘুষি,চড়,থাপ্পর মেরে সাধারণ ও নীলাফোল জখম করে। বাদি প্রতিবাদ করলে মানিক হোসেন বাদিকে বলে যে,শালাকে এখানেই শেষ করে ফেল। ইয়াছিন বাদির নিকট চাঁদার টাকা না পেয়ে বাদির পরিহিত জিন্স প্যান্টের ডান পকেটে থাকা অপ্পো মোবাইল ফোন যার মূল্য ১৪ হাজার টাকা, রাসেল হোসেন বাদির একই পকেট থেকে একটি বাটন ফোন চাঁদা স্বরুপ কেড়ে নেয়। আসামীরা বাদির কাছে বারংবার চাঁদার টাকা চায়। বাদি চাঁদার টাকা দিকে অস্বীকার করলে আসামীরা বাদিকে মারপিট করে আহত করে। বাদিকে হুমকী দিয়ে বলে আজকে তোকে জানে মারলাম না। আজকে শুধু তোর মোটর সাইকেলটি নিয়ে গেলাম,আগামী তিন দিনের মধ্যে আরও ১লাখ টাকা চাঁদা না দিলে তোকে এবার সুযোগ পাইলে শেষ করে ফেলবো বলে বাদিকে ব্রীজের উপর ফেলে মুক্তিপণ দাবি করে। বাদির ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য মানিক হোসেনকে তার বাড়ি হতে গ্রেফতার করে। সোমবার তাকে আদালতে আদালতে সোপর্দ করে।