যশোর প্রতিনিধি
যশোরের শার্শার বালুন্ডা গ্রামে ধান সিদ্ধ কে কেন্দ্র করে স্বামী ও শাশুড়ির অত্যাচারে তামান্না (২২) নামের এক গৃহবধুর আত্মহত্যা ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে তামান্নার পিতা লাল্টু বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা করেছে। পুলিশ মামলার আসামী তামান্নার স্বামী ইব্রাহীম মোড়র (২৪) ও শাশুড়ি রেহেনা খাতুন (৪০)কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ জুন শার্শার বালুন্ডা গ্রামে। এ ঘটনায় তামান্নার পিতা দিন মজুর রাজ মিস্ত্রি লাল্টু কে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামী পক্ষের আত্মিয় স্বজনেরা বিভিন্ন ভবে হুমকি দিচ্ছে বলে জানাগেছে।
এক লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, গত ২ বছর পূর্বে শার্শার গোপালপুর গ্রামের দিন মুজুর রাজ মিস্ত্রি লাল্টুর মেয়ে তামান্নার সাথে বালুন্ডা গ্রামের সাজেদুর রহমানের ছেলে ইব্রাহীমের এর বিবাহ হয়। এর পর তাদের কোল জুড়ে একটি পুত্র সন্তান হয়। তার বয়ষ এখন ৬ মাস।
অভিযোগে জানা গেছে, বিবাহের পর থেকে ইব্রাহীম ও তার মা তামান্নার উপর বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে আসছে। এরই জের ধরে গত ১১মে ধান সিদ্ধকে কেন্দ্র করে তামান্নার উপর তার স্বামী ও শাশুড়ি মারপিট ও নির্যাতন করে। এর এক পর্যায় স্বামী ইব্রাহীম ও তার মা রেহেনা খাতুন জোর করে গৃহবধু তামান্নাকে বিষ খেতে বাধ্য করে। এরপর মনের কষ্টে স্বামী ও শাশুড়ির এনে দেওয়া বিষ পান করে । এরপর স্বামী ও শাশুড়ির সামনে তামান্না মৃত্যুর যন্ত্রনায় ছটফট করে। এরপর তামান্নার পিতা খবর পেয়ে বালুন্ডা গ্রামে তার মেয়ের বাড়িতে এসে দেখে তার মেয়ে বিষ পান করে মৃত্যুর যন্ত্রনায় ছটফট করছে। এ সময় তিনি তার মেয়েকে নিয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ দিনই তামানানর মৃত্যু হয়।
লিখিত অভিযোগে আরও জানাগেছে, স্বামী ইব্রাহীম ও তার মা রেহেনা খাতুন জোর করে গৃহবধু তামান্নাকে বিষ খেতে বাধ্য করে এবং বিষ খাওয়ার পর তাকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে।যে কারনে তামান্নার মৃত্যু হয়। অভিযোগ রয়েছে এটা একটা হত্যা। তামান্নার পিতা দিন মুজুর রাজমিস্ত্রি (ইমারত মিস্ত্রি) লাল্টু তার মেয়ের হত্যাকারী তামান্নার স্বামী ও শাশুড়ির আদালতে সু বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি চাই।মোঃ লাল্টু তার মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে সঠিক বিচারের জন্য বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন ঘটনাটি খুবই দুঃখ জনক। তিনি বলে এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। ঘটনা সঠিক ভাবে তদন্ত করে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।