যশোরে প্রতারণা পূর্বক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা তিন প্রতারক গ্রেফতার

যশোর প্রতিনিধি
প্রতারণা পূর্বক টাকা আতœসাত, চাঁদাদাবি ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে । এঘটনায় ওই গ্রামের মোছাঃ সালমা খাতুন ৭ মে শনিবার ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামিরা হচ্ছে, যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হরিদাসকাঠি গ্রামের মিজানুর গাজী একই উপজেলার চানপুর বাজার মাইঝিলি রাজগঞ্জ রোডের ইব্রাহিম হোসেন ওরফে কালু ও হরিদাসকাঠির মকবুল গাজী । পুলিশ তিন প্রতারককে গ্রেফতার করে রোববার আদালতে সোপর্দ করেছে।
মামলায় সালমা বলেন, তিনি যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামে মামা আক্তার মাওলানার বাড়ি থাকেন। গত ১৩ জানুয়ারি বিকেলে আসামি মিজানুর গাজী ও ইব্রাহিম হোসেন কালু বন্ধু রাসেলকে বিয়ে দেবে বলে সালমাদের বাড়ি যায় ও ভালো মেয়ে আছে কিনা জিজ্ঞেস করে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তারা জানায় তাদের বন্দু সেনাবাহিনীতে চাকুরি করে বর্তমানে কক্সবাজারে আছে। সালমা তার মেয়ে খাদিজার কথা বললে আসামিরা মেয়েকে দেখতে চায় ও মেয়ে দেখে পছন্দ করে। যাওয়ার সময় মেয়ের সাথে ছবি তোলে ও যোগাযোগের জন্য সালমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় আসামি মিজানুর গাজী সেনাবাহিনীতে চাকুরি করে নিজেকে রাসেল পরিচয় দিয়ে সালমার মোবাইলে ফোন করে সালমা ও তার স্বামীর সাথে কথা বলে। পরে ১৫ জানুয়ারি এক মিজানুর গাজী আবারো সালমাকে ফোন করে তার পিতা মাতা নেই বলে কান্নাকাটি করে। একই সাথে বলে তার চাকুরির ক্ষতি হচ্ছে ২ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা না দিলে চাকুরির ক্ষতি হবে। সালমা ও তার স্বামী সরল বিশ্বাসে মিজানুর গাজীর দেয়া মোবাইল নাম্বারে ১৭ জানুয়ারি ২২ হাজার ৫শ’ টাকা। ১৯ জানুয়ারি আর একটি নাম্বারে ১১ হাজার টাকা ও বিভিন্ন সময় ১৮ হাজার টাকাসহ মোট ৫১ হাজার ৫শ’ টাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্রতারণার মাধ্যমে আরো টাকা নেয়ার জন্য ২৬ জানুয়ারি বিকেলে প্রতারক মিজানুর গাজী সালমার বাড়ি যায়। যেয়ে বলে রাসেল তাকে পাঠিয়েছে তার আরো টাকা প্রয়োজন। সরল বিশ্বাসে সালমা ও তার স্বামী নগদ দেড় লাখ টাকা দেয়। সেনাবাহিনীতে চাকুরি করে রাসেল পরিচয় দিয়ে প্রতিনিয়ত কথা বলে ও  বিভিন্ন ওজুহাতে টাকা চাওয়ায় সালমার সন্দেহ হয়। এরপর খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন আসামিরা প্রতারক। মিজানুর গাজী ও তার সহযোগী আসামিরা পরিচয় গোপন করেন রাসেল দিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। আসামিরা বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রতারণার মাধ্যমে সালমাদের কাছ থেকে ২ লাখ ১৫শ’ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২৬ এপ্রিল সকালে সালমা প্রতারক মিজানুর গাজীর কাছে টাকা ফেরত চাইলে সে বলে মেয়ের ছবি এডিটিং করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে পরিবারের মানসম্মান ক্ষুন্ন করবে  ও মেয়েকে বিয়ে দিতে দেবে না বলে হুমকি দিয়ে আরো ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরিবারের মানসম্মান ও মেয়ের কথা চিন্তা করে সালমা ওই দিন বিকেলে আসামিদের নগদ ২৭ হাজার টাকা প্রদান করে। কিন্তু আসামিরা আরো টাকা চেয়ে সালমার পরিবারকে ক্ষয়ক্ষতিসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে আসছে।  উপায়ূন্তর না পেয়ে সালমা মামলা করতে বাধ্য হয়। মামলা হওয়ার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শনিবার রাতে আসামীদের নিজ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করে। রোববার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে