খাজুরা স্কুলে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ম্যানেজিং কমিটির কার্যক্রম স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর: যশোরের খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকালে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে ওই কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। পরে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের নেতৃত্বে এলাকার উত্তাপ্ত পরিবেশ শান্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য অভিভাবকদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত না করেই একটি পক্ষ অবৈধভাবে কমিটির সদস্য নির্বাচিত করার জন্য অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। কার্যক্রম সফল করতে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের জড়ো করার উদ্দ্যোগ নেয়া হয়। বিষয়টি এলাকাবাসী বুঝতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়।
বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মঈন উদ্দিন ময়না জানান, ‘তারা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে খাজুরা এম এন মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করতে চাই। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জাকির হোসেন মিনি নিজের স্বার্থ হাসিল করতে অবৈধভাবে কমিটি গঠনের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের জড়ো করে। প্রশাসন ও এলাকাবাসীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখে তারা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি। তার উদ্দেশ্যে ছিল একাধিক মামলার আসামি বিএনপি নেতা জামতলা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও রাজাপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনকে জোরপূর্বকভাবে অভিভাবক সদস্য করা। সেই উদ্দেশ্যে বাস্তবায়ন করার জন্য সন্ত্রাসীদের জড়ো করে। বর্তমান কমিটির সভাপতি সৈয়দ মুনির হোসেন টগরের মদদে জাকির হোসেন মিনি এটা করছেন। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে সেই অবৈধ চেষ্টা বাস্তবায়িত হয়নি। পরে সভাপতি তাকে ফোন করে বলেন যশোর শহরে আসেন মির্টিং হবে। এলাকাবাসী বক্তব্য স্কুলের সকল সিদ্ধান্ত স্কুলে মির্টিং করে নেয়া হবে। সেইজন্য কোন শিক্ষক ও অভিভাবক মিটিং করতে যশোর শহরে যাননি।
নাম প্রকাশে অনচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, জাকির হোসেন হোসেন মিনি নিজের স্বার্থে সভাপতিকে ব্যবহার করছেন। তার ইচ্ছামত কমিটি গঠনের অবৈধ চেষ্টা চালচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের জড়ো করছেন। দুজন সন্ত্রাসীকে তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি বানানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। সেইজন্য সভাপতির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। মিনি নিয়মিত স্কুলে আসেন না। শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন না। সপ্তাহে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। এভাবে চলতে থাকলে সকল অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে মিনির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হবে।
প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান বলেন, মঙ্গলবারে মির্টিং কল করার জন্য সভাপতি আমাকে বলেন। সেই মোতাবেক কার্যক্রম শুরু করি। কিন্তু পার্শ্ববর্তী এলাকার সন্ত্রাসীরা আমাকে ফোন দিচ্ছেন। বলছে স্যার স্কুলের কমিটি হবে? ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করার তারা উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। সুন্দর পরিবেশে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির সেকেন্ড অফিসার অলিদ হোসেন বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছিল। আশপাশে বিভিন্ন ধরণের লোকজন জড়ো হয়েছিল। কিন্তু কেউ স্কুলে প্রবেশ করতে পারেনি। ম্যানেজিং কমিটির মির্টিংও স্থগিত হয়ে গেছে। পরিবেশ স্বাভাবিক আছে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।