যশোরে বাদী মামলায় নাম দিলেই সবাই খুনী হয়ে যাবেনা

শোর প্রতিনিধি: যশোর শহরের পুরাতন কসবা টালীখোলায় সন্ত্রাসী রুম্মান হত্যাকান্ডে ১১ জনকে আসামি করে মামলা করা হলেও আটককৃত দু জনের জবাবন্দিতে পরিস্কার হয়েছে ঘটনার সাথে কারা কারা জড়িত। ঐদিনের ঘটনাস্থলে ছিলনা এবং আটককৃতদের জবানবন্দীতে নাম নেই এমন একজন সাধারণ গার্মেন্টস কর্মীকে মামলায় ফাঁসিয়ে হয়ারানী করা হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে ও ঘটনার সাথে যথাযথ ভাবে তদন্ত করতে জেলা গোয়েন্দা শাখার প্রতি আহবান জানিয়েছেন স্থানীয়রা ওভুক্তভোগী মহল। এছাড়া প্রকৃতপক্ষে ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে আটক করার দাবি জানিয়েছেন তাদের পক্ষ থেকে।

 গত ২৫ মার্চ রাতে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন হন একাধিক মামলার আসামি বহু বিতর্কিত হোসাইন মোহম্মদ রুম্মান। হত্যকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি পুরাতন কসবা পুলিশ লাইন গেটের আলিমুজ্জামান। মামলায় আলিমুজ্জামান উল্লেখ করেছেন, তার শ্যালক রুম্মান ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতো। পাওনা টাকা নিয়ে আসামি আরিফসহ অন্যান্য আসামিদের সাথে রুম্মানের পূর্ব শত্রুতা ও বিরোধ চলে আসছিলো। এ কারণে আসামিরা রুম্মানকে মারপিট খুন জখমের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছিলো। ২৫ মার্চ শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টায় আসামি আরিফ রুম্মানকে পাওনা টাকা নেয়ার জন্য যেতে বলে। রুম্মান টাকা নেয়ার জন্য পুরাতন কসবা কাঠালতলার আব্দুর জব্বারের ভাংড়ী দোকানের পিছনে যেয়ে আরিফের নিকট পাওনা টাকা চায়। টাকা না দেয়ায় আরিফের সাথে রুম্মানের কথাকাটাকাটি হয়। টাকা না পেয়ে রুম্মান বাড়িতে আসার প্রস্তুতি নিলে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ধারালো দা লোহার রড ও বার্মিজ চাকু নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রুম্মানের উপর হামলা চালায়। মামলায় আসামি করা হয় পুরাতন কসবা ঢাকা রোড রায়পাড়া বটতলা ব্রিজের পাশে মৃত বজলু খলিফার তিন ছেলে আরিফ হোসেন আরিফ, আহাদ ও শাহাদত হোসেন , পুরাতনকসবা কাজিপাড়ার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে ইকরামুল, সদর উপজেলার শেখহাটির মতিয়ার রহমানের ছেলেমাইমুন, নতুন উপশহরের সাজ্জাদ হোসেন, পুরাতন কসবা ঢাকা রোড রায়পাড়া বটতলা ব্রিজের পাশে সিরাজের ছেলে আব্দুর রহমান, একই এলাকার আলিম হোসেন হৃদয় ওরফে গেরিলা হৃদয়, শুভ, ফারুক হোসেনের ছেলে ভাষা,আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে জোনায়েত শিমুলকে।
 এঘটনায় পুলিশ আলিম হোসেন হৃদয়, চুয়াডাঙ্গার জিবননগরের মাঝেরপাড়া প্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে বিপুলকে। এদের মধ্যে হৃদয় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবাবন্দী প্রদান করে। এই হত্যাকান্ডে জড়িত বলে হৃদয় নিজে, মাইমুন আরিফসহ আরো দুই জনের নাম বলে। হৃদয় আদালতে জানায় মূলত প্রধান অভিযুক্ত আরিফের সাথে রুম্মানের আর্থিক লেনদেন ছিলো। সেই সূত্রধরে তাদের মধ্যে গোলোযোগ হয়। আরিফ, মাইমুনসহ আরো কয়েকজন প্রথমে স্ট্রেপ করে। পরে হৃদয়ও চাকু দিয়ে রুম্মানকে আঘাত করে দ্রুত তারা সবাই সটকে পড়ে। ওই তালিকায় মামলার ৭ নাম্বার আসামি আব্দর রহমানের নাম নেই। ঘটনাস্থলে সে ছিলনা। সে একজন গার্মেন্টস কর্মী। উপশহরের একটি কাপড়ে দোকানে চাকরি করে। আসামিদের এক জনের সাথে তার পরিচয় রয়েছে মাত্র। সেই সূত্র ধরে মামলায় ওই আব্দুর রহমানের নাম ঢুকয়ে দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। এছাড়া যে দোকানে অস্ত্র রাখা হয়েছিল সেই দোকানী মিজা ওয়াহেদের জবানবন্দী নেয়া হলেও সেখানেও আব্দুর রহমানের নাম নেই। আর কে হৃদয়, সৌমসহ কয়েকজনের নাম এসেছে। বিশেষ করে মিশন সদস্য আলিম হোসেন হৃদয়ে জবান বন্দীতে মুল আমিদের নাম এসে গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন জবানবন্দীতে মাইমুন, হৃদয় যে নামগুলো বলেছে তার্ইা জড়িত। এখানে আব্দুর রহমান নামে নির্দোষ যুবকের নাম মামলায় জড়িয়ে সে সহ তার পরিবারকে হতাশা উৎকন্ঠায় ফেলেছে বাদী আলিমুজ্জামান। এব্যাপারে ডিবির তদন্ত র্কমকর্তা এবং থানা পুলিশের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আব্দুর রহমানকে হয়রানী না করতে আহবান জানিয়েছেন ওই এলাকার মানুষ। মামলায় যে বর্ননা এসেছে তাতে আসামি আরিফের হুকুমে আহাদ বার্মিজ চাকু দিয়ে রুম্মানের বুকের বামপাশে পাজরে আঘাত করে রক্তাত্ত জখম করে। ৫ নং আসামি মাইমুন রুম্মানের হাত ধরে রাখে ১ নং আসামি আরিফ বার্মিজ চাকু দিয়ে আঘাত করে নাভির বামপাশে জখম করে। ৪ নং আসামি ইকরামুল ধারালো দা দিয়ে নিতম্ভের বাম পাশে কোপ মেরে জখম করে। হত্যাকান্ডে মামলা ৫ নাম্বার আসামি পর্যন্ত তাদের ভূমিকা পরিস্কার করেছেন বাদী। আর অন্য আসামিদের বেলায় তার বক্তব্য ধুয়াশা ও অন্ধারাছন্ন। স্থানীয়দের দাবি কারো দারা প্রভাবিত হয়ে মামলায় আব্দুর রহমানসহ কয়েকজনের না ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই সোলাইমান আক্কাস, মামলায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। ঘটনায় জড়িত না থাকলে কারো বিরুদ্ধে অ্যাকশানে যাবেন না তিনি। আব্দুর রহমান নামে যে যুবকের নাম আসছে নির্দোষ হিসেবে সে ব্যাপারে আন্তরিক তিনি। খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। এব্যাপারে তথ্যগত সহায়তা চান তিনি। মামলার ১১ আসামি সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে দোষী নির্দোষী যাচাই বাছাই করা হবে। বাদী মামলায় নাম দিলেই সবাই খুনী হয়ে যাবেনা। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্হা নেবেন বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।