অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে চাঁদাবাজির অভিযোগে প্রেফতার-৭

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: উঠতি বয়সী যুবকদের ডেকে নিয়ে পতিতাদের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করে গোপনে ভিডিও ধারণ এবং সেই ভিডিও ব্যবহার ব্লাকমেইল করে চাঁদাবাজির অভিযোগে বাড়ির মালিক রেহানা আক্তার, কুলসুম খাতুন কাজল, আলেক চাঁদ ও কিশোর গ্যাং নেতা স্বাধীন সহ ৭ জনকে আটক করেছে র‌্যাব-১২।

গতকাল (২৭ ডিসেম্বর) সোমবার কুষ্টিয়া জগতি এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই ৭ জনকে আটক করে র‌্যাব-১২ সিপিসি-১’র একটি অভিযানিক দল।

বিষয়টি (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া র‌্যাব-১২’র কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মাদ ইলিয়াস খাঁন।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গত সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়ার একটি অভিযানিক দল ২ যুবককে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ৭ জন রেহানা আক্তার ওরফে ফরিদা খাতুন ওরফে বুড়ি, কুলসুম খাতুন কাজল, তরিকুল ইসলাম, রাসেল আহমেদ, আলেক চাঁদ, আবির ইসলাম স্বাধীন, পারভেজ শেখ সর্ব থানা- কুষ্টিয়া সদর ও সর্ব জেলা- কুষ্টিয়াকে কুষ্টিয়ার জগতি এলাকার একটি বাড়ি থেকে আটক করতে সক্ষম হয়।

এসময় ওই বাড়ি হতে জিম্মিকৃত ২ যুবক তামিম উজ্জামান চৌধুরী ও মারজান হোসেন মিয়াকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ৩ জনের মোবাইল ফোনে জিম্মি ২ যুবকের নগ্ন স্থিরচিত্র ও ভিডিও উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ির মালিক রেহানা আক্তার ও কুলসুম খাতুন স্বীকার করেন যে উঠতি বয়সী যুবকদের বাড়িতে ডেকে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ভিডিয়ো ধারণ করে তা পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠানো এবং ইন্টারনেটে প্রকাশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে তারা এধরণের কাজ করতো। তাদের এই কাজে সহায়তা করতো এলাকার কিছু স্থানীয় সাংবাদিক। আটককৃত রেহানা আক্তার প্রথমে মোবাইল ফোনে যুবকদের ডেকে এনে আগে থেকে বাড়িতে অবস্থান করা পতিতার সঙ্গে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে দিতেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিক নামধারী কয়েকজন যুবক সেই কক্ষে ঢুকে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারণ করতো। কেউ বাঁধা দিতে চাইলে জোরপূর্বক বা ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা এধরনের ভিডিও ধারণ করতো।

গ্রেফতারকৃত তরিকুল, রাসেল, আলেক চাঁদ ও স্বাধীন স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকতার কাজ করে। তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে এধরনের চাঁদাবাজির অনেক অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারকৃত রেহানা আক্তারের মোট ৩ টি বিয়ে হয়েছে। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি আরও ২ টি বিয়ে করেন। তৃতীয় স্বামী বিয়ের পর রেহানার চারিত্রিক ত্রুটির কথা জানতে পারে। তিনি রেহানাকে শুধরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে রেহানাকে তালাক দেয়।২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে রেহানা আক্তার নিজ বাড়িতে বসবাস করে। তিনি গত কয়েকবছর যাবৎ নিজ বাড়িতে এধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। প্রায় ৬-৭ বছর পূর্বে তিনি মাদক মামলায় প্রেফতার হয়ে ১ বছর কারাভোগ করেন। আটককৃত আসামীদের প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।