কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের এক বাক প্রতিবন্ধীকে যৌতুকের দাবিতে অমানুষিক নির্যাতন করেছে স্বামী, মামা শ্বশুড় সহ তার পরিবারের লোকজন। সরজমিনে গিয়ে বাক প্রতিবন্ধী রহিমা (ছদ্মনাম) এর পিতা পঙ্গু আলাউদ্দিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত সাত মাস পূর্বে একই গ্রামের মাছুদের ছেলে আলিফের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে আলিফ, আলিফের মা অপেলা, মামা একই গ্রামের শুকুর শাহের ছেলে রাজ্জাক, রাজ্জাকের ছেলে রাজীব সহ তার পরিবারের অন্য সদস্যরা অসহায় বাক প্রতিবন্ধী মেয়েটির উপর প্রতিনিয়ত অমানুষিক নির্যাতন চালায় এবং আলিফ প্রতিদিন রাতে প্রতিবন্ধী মেয়েটির সারা শরীরে সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ক্ষত বিক্ষত করে।
এছাড়াও গত শনিবারের রাতে আলিফ, মামা রাজ্জাক ও তার ছেলে রাজীব, আলিফের মা অপেলা মিলে প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশে ক্যানেলের ধারে নিয়ে গিয়ে অমানবিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকলে স্থানীয়রা মেয়েটিকে উদ্ধার করে। আহত অবস্থায় প্রতিবন্ধী মেয়েটির পরিবার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী আলিফ, মামা শ্বশুড় রাজ্জাক অসহায় প্রতিবন্ধী মেয়েটির পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদান করে আসছে। মামলা না করার জন্য হুমকি প্রদান করছে। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী অসহায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবন্ধী রহিমার (ছদ্মনাম) মামা শ্বশুড় রাজ্জাক এলাকার নাম করা লম্পট। বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধী রহিমাকে (ছদ্মনাম) শীলতাহানির চেষ্টাও করে এই লম্পট রাজ্জাক। প্রতিবন্ধী রহিমার (ছদ্মনাম) পিতা আলাউদ্দিন আরো জানায়, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য আমার প্রতিবন্ধী মেয়ের উপর পাষবিক নির্যাতন চালায় তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন। আমি অসহায় গরীব মানুষ, যৌতুকের টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ নেই আমার। তাদের কাছে অনেক কাকুতি-মিনতি করেও কোনো কাজ হয়নি। তারা আমার মেয়ের উপর পাষবিক নির্যাতন করেই চলেছে। আমার মেয়েকে বিয়ের আগে আলিফ বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতো।
আমি সেই সময় কুষ্টিয়া আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলাও করেছি। যার মামলা নং-৬০/২১। পরে গ্রাম্য শলিসের মাধ্যমে আমার মেয়ের সাথে আলিফের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য শুরু হয় আমার মেয়ের উপর পাষবিক নির্যাতন। আলাউদ্দিন তার মেয়েকে সহ তার পরিবারের সকল সদস্যদের বাচাতে পাশাপাশি সঠিক বিচারের আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়াচ্ছেন।