যশোরে বোনের সাথে অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে নিজেই স্বামীকে খুন করে হালিমা

যশোর প্রতিনিধি
যশোর মণিরামপুরে বোনের সাথে অনৈতিক কর্মকান্ড- দেখে নিজেই স্বামীকে খুন করে হালিমা বেগম। গতকাল বুধবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে এই কথা বলেন তিনি। জবানবন্দি শেষে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আহমেদ তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। আসামি হালিমা বেগম মণিরামপুর উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের মৃত আকবর আলী গাজীর স্ত্রী।
হালিমা বেগম জানিয়েছেন, তার আপন বোন সালেহা খাতুনের সাথে স্বামী আকবর আলীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার সূত্র ধরে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তার বোনের সাথে স্বামী আকবর আলী অণেতিক সম্পর্ক ধরে ফেলেন। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের এমনকি দুইজনের মধ্যে মারামারি হয়। এক পর্যায় হালিমা তার স্বামীকে খুন করার জন্য পরিকল্পনা করে। তারই জের ধরে একই বছরের ১৮ নভেম্বর রাতে স্বামী আকবর আলী ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এসময় ঘরে থাকা গরু-ছাগল জবাই করা ছুরি দিয়ে স্বামীকে গলা কেটে নিজেই হত্যা করে। এরপরে পূর্ব থেকে বিরোধ থাকা প্রতিবেশি আব্দুল হাই, তার স্ত্রী পারভীনা খাতুন, জুলেখা বেগম ও আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে মণিরামপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলাটি প্রথমে মণিরামপুর থানার এসআই আইনুদ্দিন তদন্ত করেন। এসময় পূর্ব থেকে বিরোধের জেল ধরে প্রতিবেশিদের কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের উপর ন্যাস্ত হয়। সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক সুব্রত কুমার পাল এই মামলায় নিহতের স্ত্রী হালিমা বেগমকে আটকের পর ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করেন। বিচারক আসামি হালিমা বেগমকে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন হালিমা বেগম।
এদিকে এই ঘটনার মামলার বাদী নিহতের ছেলে মিন্টু হোসেনের দায়ের করা মামলায় বলেছেন, প্রতিবেশি আব্দুল হাই তার স্ত্রী পারভীন খাতুন, সোবহান দপ্তরীর মেয়ে জুলেখা বেগম এবং বাবর আলীর ছেলে আনিছুর রহমানের সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে আসামিরা হত্যা মামলার বাদী মিন্টুর মা হালিমা বেগম ও তার মামা মিনাজ কাশেম, মামাতো ভাই নুর নবী ও রাজমিস্ত্রি শরিফুলের নামে একটি ননএফআইআর মামলা করে। ওই মামলা মিমাংসার জন্য তারই জের ধরে তাদের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। এক পর্যায় ওই সময় তাদের কাছে ওই পরিমান টাকা না থাকায় জোর করে আসামিরা মিন্টুর মামার কাছ থেকে ৩শ’ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাস্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পাশাপাশি তাদের খুন জখমের হুমকি দেয়। ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে বিপিএল খেলা দেখার পরে ঘুমাইয়া পড়ে। গভীর রাত দেড়টার দিকে চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন বাদীর পিতা আকবর আলী গাজীর গলা কাটা লাশ পড়ে আছে। বাদী মিন্টু গাজীর ধারনা এজাহার নামীয় আসামিরাসহ অজ্ঞানামা আরো কয়েকজনে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার মায়ের মুখে ওড়না দিয়ে বেধে রেখে তার পিতা আকবর আলী গাজীকে প্রথমে বালিশ চাপা এবং পরে গলা কেটে হত্যা করে।