নারী লোভী সাব রেজিস্ট্রোরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

যশোর প্রতিনিধি
ধর্ষণ চেষ্টা ও পর্ণোগ্রাফী আইনে বাঘারপাড়া সাব রেজিস্ট্রার রিপন মুন্সির বিরুদ্ধে এবার যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন তারই অফিসের সেই নারী নকল নবিশ। সোমবার যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইবুন্যাল-১ আদালতে এ মামলা করেন। জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। যার পিটিশন নং ৪৭/২০২১। এর আগে বাঘারপাড়া থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন বাদী এ নকল নবীশ। এছাড়াও সুবিচার পেতে ভূমি মন্ত্রণালয়, পুলিশ সুপার যশোর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাঘারপাড়াসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন ঐ নারী।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তিনি ২০০৯ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ওই অফিসে কর্মরত। বাঘারপাড়া সাব রেজিস্ট্রার বাঘারপাড়া অফিসে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় তাকে কুপ্রস্তাব ও দৈহিক স্থাপন সম্পর্ক করার জন্য জোর করতেন। এমনকি মুঠোফোনে বিভিন্ন অশ্লীল ছবি দিয়ে তাকে বিরক্ত করতো। এরমাঝে তিনি অফিসের বালাম বইতে স্বাক্ষর করার জন্য রিপন মুন্সির ঘরে গেলে হঠাৎ করে জড়িয়ে ধরে যৌন নির্যাতন করেন। এতেও তিনি থেমে থাকেননি। গভীর রাতে তার ব্যবহৃত মোবাইলের মাধ্যমে ইমোতে যৌনাঙ্গের অশ্লীল ছবি দিয়ে ফের যৌন হয়রানির জন্য প্রলোভন দেখায়। এসব কর্মকান্ডে রাজি না হওয়ায় অফিসিয়াল কাজের মাধ্যমে নির্যাতন শুরু করেন। তার কথায় রাজী না হলে আর কাজ দেয়া হবেনা বলেও সাফ জানিয়ে দেন। এরপর গত ৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় অফিসের ওমেদার মনিরুজ্জামান জনিকে দিয়ে বাদীকে চেম্বারে ডেকে নিয়ে যায় রিপন মুন্সি। পরে বসতে বলে। এরপর বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাতদিয়ে যৌন হয়রানি করে। একপর্যায় ধর্ষণ চেষ্টা করেন। বাদী চিৎকার করে দৌঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। এসময় অফিস কর্মী মেহেদী, মারুফ হোসেন, তাসলিমা খাতুন, মাসুদ রানা ও সবুরন নেছা দেখেন কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে মুখখোলার সাহস পায়নি। এরপর গত ২০ জুন রিপন মুন্সি বাদীকে মৌখিক ভাবে বহিস্কার করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অফিস থেকে বের করে দেন। এবিষয়ে তিনি অফিসের অফিস সহকারী, নকল নবিশ এসেসিয়েশনের সভাপতি ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতিকে বিষয়টি জানালেও কোনো লাভ হয়নি। এরপর থানায় অভিযোগ করেন। থানা থেকে আদালতে মামলা করার নির্দেশনা দিলে তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।
শুধুই একজন নয়, অসংখ্য নারীই তার যৌন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। যে সহজেই রাজি হচ্ছেন তার কোনো সমস্যা নেই। তাদেরকে নিয়ে সন্ধারপর অফিসের খাস কামরায় ঘণ্টার পর ঘন্টা গল্প করেন সাব রেজিস্ট্রার রিপন মুন্সি। এরমাঝে রাবেয়া নামের এক জনকে অশ্লীল অবস্থায় ধরাও খান এই নারী লোভি রিপন মুন্সি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হালিম জোয়ার্দার সোমবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে জানান, দুইটি ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। আজই শুনানী হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যথায় শুনানির জন্য দিন পড়তে পারে বলে জানান হালিম।