মাধঘোপা নিউজ ডেক্স: ঢাকা বোট ক্লাবকান্ডের আগের রাতে অর্থাৎ ৭ জুন দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমণি জোর করে ঢুকে ভাঙচুর করেন। মদ চেয়ে না পেয়ে তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে ১৫টি গ্লাস, ৯টি অ্যাশট্রে এবং বেশ কিছু প্লেট ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষটি নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, পরীমণির ভাঙচুরের ঘটনায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ কথা জানান। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লাবের ঘটনাটি আমাদের গুলশান টিমের এলাকায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করবো। এ বিষয়ে যেকোনো ধরনের অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা জেনেছি ৮ জুন গভীর রাতে পরীমণি ওই ক্লাবে গিয়েছেন, ৯৯৯ নম্বরে একটি ফোনে ওখানকার ঘটনাটি জানতে পারে পুলিশ। তবে, পরবর্তীতে এটা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা এটা নিয়ে কাজ করবো।
এর আগে, বোট ক্লাবের ঘটনায় পরীমণির অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে পরীমণিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি মামলা হয়েছে ঢাকা জেলাতে। যেহেতু মামলাগুলো চলমান, পরীমণি অবশ্যই প্রয়োজনে সব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আসবে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত শেষে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা যাবে।
৭ জুন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় এই নায়িকা ও তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ওই ক্লাবে গিয়ে গ্লাস ভাঙচুর করেছেন বলে অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কেএম আলমগীর ইকবাল দাবি করেন। গণমাধ্যমে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। তবে ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরীমণি।
আলমগীর ইকবাল বলেন, প্রতিটি ক্লাবের একটি ড্রেস কোড থাকে। কোনো পুরুষ যদি আসেন, তখন তাকে কিছু ড্রেস কোড মেইনটেইন করতে হয়। তবে ওই রাতে পরীমণির সঙ্গে যে পুরুষ ব্যক্তি এসেছিলেন তিনি হাফপ্যান্ট, স্যান্ডেল এবং টি-শার্ট পরিহিত ছিলেন। তাকে বলা হয়েছিল আপনি ড্রেস কোড লঙ্ঘন করেছেন। এভাবে ভিতরে যাওয়া যাবে না। কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনতে চাচ্ছিলেন না। রাত তখন বেশি হয়ে যাওয়ায় লোকজনও ছিল কম। ক্লাবের দুজন সদস্য তখন ছিলেন। পরীমণি ক্লাবের সদস্য নন। এর পরও অনেকটা জোর করেই ক্লাবে ঢুকতে চান।
একজন সদস্যের রেফারেন্স নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। ওই সদস্য তখন ছিলেন না। এ সময় পরীমণি তার পরিচিত ওই সদস্যের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন। সদস্য তাকে ফিরে চলে যাওয়ার অনুরোধ করে ফোন রেখে দেন। এরপরও পরীমণি মদ চাওয়ার পর না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ক্লাবের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। এ সময় তার সঙ্গে আরও তিনজন সঙ্গী ছিলেন। তারাও পরদিন বোট ক্লাবে গিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত ৭ জুন গভীর রাতে ৯৯৯ এর একটি কলে গুলশান থানা-পুলিশের দুটি দল অল কমিউনিটি ক্লাবে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কথা কাটাকাটির জেরে ক্লাবে গ্লাস ভাঙচুর করেছেন পরীমণি। পরে আর এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেননি। তবে আমাদের অফিসার থানায় নোট দিয়ে রেখেছেন। যদিও এখনো পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। প্রয়োজন হলে আমরা (পুলিশ) ক্লাবে আবারও পরিদর্শনে যাব। সিসিটিভির ফুটেজে পরীমণির মাতাল অবস্থায় প্রবেশ ও বের হওয়ার ছবিও প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।